জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেছেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বিকাশে উচ্চ শিক্ষার মান উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্য দূর করতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অবদান অন্তত ৫০ শতাংশ।
রবিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর মো. লুৎফর রহমান।
ভাইস-চ্যান্সেলর আমানুল্লাহ বলেন, “দেশের উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারী শতকরা ৭০ ভাগ ছাত্র-ছাত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের। গণঅভ্যুত্থানে তারা দেশের স্বার্থে অংশ নিয়েছে, তাদের ব্যক্তিগত কোন চাওয়া পাওয়া ছিল না। তাই শুধু ২৬ জনের শহিদ হওয়ার মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান সীমাবদ্ধ নয়।”
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় ইতোমধ্যে “জুলাই শহীদ স্মৃতি শিক্ষা বৃত্তি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়” চালু করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের শহীদ পরিবার ও আহত শিক্ষার্থীদের সকল ধরণের ফি মওকুফ করা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি রক্ষায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো অনেক পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন এগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।”
ভাইস-চ্যান্সেলর আমানুল্লাহ আরও বলেন, “বিশ্বের বেশিরভাগ গণঅভ্যুত্থানের লক্ষ্য পূরণ হয়নি আন্দোলনের সাথে জড়িতদের মধ্যে অনৈক্যের কারণে। সবক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠায় মতভেদ দূর করতে না পারলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধরে রাখা কঠিন হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা অনুসরণ করে দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষা ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। এরপর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা সভায় জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে শহীদ ও আহতদের পরিবারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস কর্তৃক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রবর্তিত জুলাই শহিদ স্মৃতি শিক্ষা বৃত্তি প্রদান কার্যক্রম এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. আশেক কবির চৌধুরী, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. এনামুল করিম, এস্টেট দপ্তরের পরিচালক মোসলেম উদ্দিন, সহযোগী অধ্যাপক হাদিউজ্জামান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মিয়া হোসেন রানা, আবু হানিফ খন্দকার, আকরাম হোসেন, মাসুদুর রহমান এবং কর্মচারীদের পক্ষে ইয়াকুব হোসেন, আলমগীর সরকার, মিয়াজউদ্দিন প্রমুখ। আলোচনা সভা উপস্থাপনা ও সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক নাজিমুদ্দিন আহমেদ শিশিম।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন