৩ অক্টোবর (আজ) মধ্যরাতে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে সকল প্রকার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে; যা ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ইলিশের নিরাপদ প্রজনন এবং বেড়ে ওঠার লক্ষ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে জেলার জেলেপল্লিগুলোয় দেখা দিয়েছে হতাশা। এ ২২ দিন পরিবার-পরিজন নিয়ে কীভাবে দিন কাটবে, এ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই জেলেদের।
মৎস্য বিভাগ জানায়, ভোলার সাত উপজেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় আড়াই লাখ জেলে। তবে সরকারিভাবে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ।
ভোলার বিভিন্ন মাছঘাটের জেলে ও আড়তদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সারা বছর নদীতে ইলিশের দেখা মেলেনি। মৌসুমের শেষ প্রান্তে এসে দুই সপ্তাহ ধরে জালে ইলিশ ধরা পড়া শুরু করেছে। আর মাসখানেক ইলিশ ধরতে পারলে সারা বছরের লোকসান পুষিয়ে নেওয়া যেত। একটি খবর তাদের মুখের হাসি ম্লান করে দিয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় ১০ দিন এগিয়ে আনায় খুবই হতাশ তারা।
ভোলার নাসিরমাঝি মাছঘাটের আড়তদার আহসান কবির লিটন জানান, নানান কারণে এবার বর্ষা মৌসুমে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় ইলিশের দেখা পাননি জেলেরা। জেলে, পাইকার, আড়তদারসহ এ পেশায় জড়িত সবাই ছিলেন লোকসানে। হতাশা বিরাজ করছিল জেলেপল্লিগুলোয়। মৌসুমের একেবারে শেষে এসে যখন নদীতে মাছের দেখা মিলতে শুরু করেছে, তখনই এলো নিষেধাজ্ঞার খবর। ১৩ অক্টোবরের পরিবর্তে ৩ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাই হতাশ। তাদের দাবি, এখনো মাছের পেটে ডিম আসেনি। নিষেধাজ্ঞার সময় ১৫-২০ দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক।জেলা মৎস্য অফিস জানায়, ইলিশের নিরাপদ প্রজনন এবং বেড়ে ওঠার জন্য প্রতি বছর মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তারা। তার ধারাবাহিকতায় এবার ৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে শুরু করে ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এ সময়ের মধ্যে মেঘনার চরইলিশা থেকে চরপিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এবং তেঁতুলিয়ার ভেদুরিয়া থেকে চররুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারে সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। অভিযান সফল করার লক্ষ্যে মৎস্য বিভাগ সভাসমাবেশ, লিফলেট বিতরণ, পোস্টারিংসহ বিভিন্নভাবে প্রচার চালাচ্ছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জানান, এ নিষেধাজ্ঞা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। জেলেদের দাবি এখন আর বিবেচনার সুযোগ নেই। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলেদের ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা রয়েছে। সরকারি বরাদ্দ পেলে নিবন্ধিত জেলেদের ওই চাল দেওয়া হবে।