ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের নিয়ন্ত্রণ এস আলম গ্রুপের হাতে যাওয়ার পর বিজ্ঞপ্তি ছাড়া নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের অবৈধ ঘোষণা করে তাদের চাকরি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলের দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে ‘সচেতন ব্যাংকার সমাজ’, ‘ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম’, ‘ইসলামী ব্যাংক সিবিএ’ এবং ‘সচেতন পেশাজীবী গ্রুপ’ নামে কয়েকটি সংগঠন। মানববন্ধনে ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরামের পক্ষে ব্যবসায়ী শাহীন আহমেদ বলেন, এস আলম গ্রুপ ও তাদের দোসররা ইসলামী ব্যাংকের দখল নিয়ে দেশের ব্যাংকিং খাতে একটি বাজে নজির স্থাপন করেছিল। এখন সময় এসেছে সেই অবৈধ নিয়োগ ও দখলদারির অবসান ঘটানোর। যাদের কারণে ব্যাংকের সেবার মান ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে, তাদের অপসারণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এস আলম নিজ এলাকায় বক্স বসিয়ে কোনো ধরনের নিয়মনীতি না মেনে অবৈধভাবে হাজারো লোক নিয়োগ দিয়েছিল। এসব নিয়োগের কারণে ব্যাংক আজ সংকটে পড়েছে। আমরা চাই, এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বহিষ্কার করা হোক।
সূত্র জানায়, ইসলামী ব্যাংক প্রায় এক দশক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সে সময় কোনো লিখিত পরীক্ষা বা যাচাই-বাছাই ছাড়াই মৌখিক নির্দেশে প্রায় ১০ হাজারের মতো লোককে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে চার হাজার নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীর বাড়ি এস আলমের নিজ উপজেলা চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকায়। এস আলমের নিয়ন্ত্রণ শুরুর আগে ২০১৬ সালে ইসলামী ব্যাংকের কর্মীর সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৫০০, যা বেড়ে দাঁড়ায় ২২ হাজারে। ২০২৪ সালে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বড় রদবদল আনা হয়। সম্প্রতি পর্ষদের নির্দেশে ওই সময় নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগ্যতা যাচাইয়ে ৫ হাজার ৩৮৫ জনকে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। তবে পরীক্ষায় অংশ নেন মাত্র ৪১৪ জন। ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, শৃঙ্খলাভঙ্গ ও আচরণবিধি না মানার অভিযোগে ৪০০ জনকে ইতোমধ্যে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বাকিদের দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে পর্ষদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রাখা হয়েছে। এর প্রতিবাদে গত শনিবার চট্টগ্রামে অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন চাকরিচ্যুতরা। পরদিন গতকাল ঢাকায় পাল্টা অবস্থান নেয় কয়েকটি সংগঠন, যারা ব্যাংকের শুদ্ধি অভিযানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।