‘আমার খুব খারাপ লাগে যখন দেখি সুস্থ সবল মানুষ ভিক্ষা করে। আমি অন্ধ হয়ে যদি কাজ করে খেতে পারি তাহলে অন্যরা কেন পারবে না। আমি সবার প্রতি অনুরোধ করি যারা সুস্থ হয়েও ভিক্ষা করে আপনারা তাদের বোঝাবেন। তাদের সহযোগিতা করবেন।’ এভাবেই বলছিলেন অন্ধ ছিদ্দিকুর রহমান। তিনি ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা। ট্রেনে ঘুরে নানান জাতের জিনিস বিক্রি করেন তিনি। গতকাল শুভসংঘ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার উদ্যোগে সহায়তা পেয়ে নিজের অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন ৭২ বছর বয়সি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নরসিংদীর বাসিন্দা ছিদ্দিকুর রহমান। আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে তার হাতে সহায়তা তুলে দেওয়া হয়। সদ্য প্রয়াত ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা মো. কোব্বাত হোসেনের পরিবারের সহযোগিতায় ছিদ্দিকুর রহমান ও কিশোর ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা মো. ফরহাদ মিয়ার হাতে সহায়তা হিসেবে তাদের বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য তুলে দেওয়া হয়।
বেলা সাড়ে ১০টার দিকে হওয়া এ আয়োজনে কোব্বাত হোসেনের পরিবারের পক্ষে অংশ নেন তার ভাই তুলাই শিমুল উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সাজ্জাদ হোসেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মতিউর রহমান, রেলওয়ে জংশন স্টেশন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ বাপ্পী, সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন স্বপন, আখাউড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. নরুন্নবী ভূঁইয়া, সাংবাদিক কাজী মফিকুল ইসলাম, জুটন বণিক, হাবিবুর রহমান, আনিসুর রহমান, রাধানগর স্পোর্টিং ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ কামাল, প্রবাসী মো. লিটন প্রমুখ।
আয়োজনের সমন্বয় করেন কালের কণ্ঠের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি ও শুভসংঘ জেলা শাখার উপদেষ্টা বিশ্বজিৎ পাল বাবু।
সহায়তা পেয়ে ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি গ্র্যাজুয়েশন করেছি। আমার এক মেয়ে অনার্স পাস। আরেক মেয়ে পড়াশোনা করে। চেষ্টা করে নিজে কিছু খেতে। ট্রেনে একেক সময় একেক ধরনের জিনিসি বিক্রি করি। ব্যবসায়িক পুঁজি বাড়াতে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগের ফলে আমার খুব সুবিধা হলো।
কিশোর ফরহাদ জানান, তার বাবা নেই। মাও থাকেন চট্টগ্রামে। সে আখাউড়ায় থেকে পানি ও জুস বিক্রি করে। ফরহাদ বলেন, আগে বাকিতে মালামাল আনতাম। এখন বসুন্ধরা থেকে যে পুঁজি দিল তাতে বাকি আনা লাগবে না। আমি নিজেই এখন সাবলম্বী হলাম। আমার মায়ের কাছে এখন থেকে আরও বেশি করে টাকা পাঠাতে পারব।’