দেশের সব সরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য স্থাপনায় জাতীয় রুফটপ কর্মসূচির আওতায় সোলার প্যানেল স্থাপন করা হবে। আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ ক্ষেত্রে প্যানেল স্থাপনে সরকারি অফিসে ক্যাপেক্স এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ওপেক্স মডেলে বিনিয়োগ করা হবে। এজন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোনো ব্যয় বহন করতে হবে না। সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগ এ-সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে।
পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচির আওতায় সরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য স্থাপনার ছাদে সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে দেশের জাতীয় গ্রিডে প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে দেশে বার্ষিক প্রায় ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা অর্থ সাশ্রয় হবে। এর মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুতের মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ২৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বছরে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমবে প্রায় ১৮ লাখ টন। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমদানিকৃত জ্বালানির ওপর নির্ভরতাও কমবে। পাশাপাশি বছরে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ প্রায় ২৫ লাখ টন কমবে। কার্বন ক্রেডিট বিক্রির মাধ্যমে বছরে প্রায় ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে। এ ছাড়াও জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি বাস্তবায়নের কারণে প্রায় নতুন ১ লাখ কর্মসংস্থান এবং উদ্যোক্তা তৈরি হবে। পরিপত্র অনুযায়ী, সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ভবনের ছাদে (ভাড়া করা স্থাপনা ব্যতীত) সোলার প্যানেল স্থাপন করতে হবে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে একটি ওয়েবভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন চালু হয়েছে, যা বিদ্যুৎ বিভাগের ওয়েবসাইটে সন্নিবেশ করা হয়েছে। এ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ছাদের আয়তন বিবেচনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির বিবরণ ও প্রাক্কলিত ব্যয় জানা যাবে। এ প্রক্রিয়ায় নেট মিটারিং পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ বিল সমন্বয় করা হবে। আর স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও হাসপাতালে ওপেক্স মডেলে বিনিয়োগ হবে, যেখানে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোনো ব্যয় বহন করতে হবে না। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের নবায়নযোগ্য জ্বালানি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চলতি বছরের মধ্যে দেশের সব সরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য স্থাপনায় সোলার প্যানেল স্থাপনের টার্গেট আছে। যেহেতু সোলার প্যানেল স্থাপনে অবকাঠামোগত তেমন কোনো জটিলতা নেই, এজন্য এগুলো স্থাপনে খুব বেশি সময় লাগবে না।