খুলনা নগরীর জলিল সরণিতে (পিএমজি গেটের বিপরীতে) ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অবৈধভাবে নির্মাণ করা স্থাপনা উচ্ছেদ করে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। একই সময় সেখানে সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে গড়ে তোলা আরেকটি স্থাপনায় লাল দাগ চিহ্নিত করে তা সরিয়ে নিতে বলা হয়। কিন্তু ওই স্থাপনা দীর্ঘদিনেও সরিয়ে নেওয়া হয়নি। উপরন্তু কেডিএর উচ্ছেদকৃত স্থানে নিয়ম না মেনে আবার বসতঘর ওঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে দুই দফায় অভিযোগ দাখিলের পর গত পরশু স্থাপনা নির্মাণকারী সন্দ্বীপকে কেডিএ ‘কারণ দর্শাও’ নোটিস দেয়। সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে স্থাপনা নির্মাণ করায় পয়োনিষ্কাশনের পানিও রাস্তায় এসে পড়ছে। এতে আশাপাশের বাসিন্দাদের ভোগান্তি বাড়ছে।
এ অবস্থা শুধু জলিল সরণিতে নয়, সিটি করপোরেশনের বর্ধিত এলাকা, সোনাডাঙ্গা, বয়রা প্রধান সড়ক, লবণচরা, টুটপাড়া, শেখপাড়া, বানিয়াখামার, গোবরচাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নকশাবহির্ভূত ভবন গড়ে উঠেছে। ফলে গাদাগাদি করে গড়ে ওঠা নকশাবহির্ভূত স্থাপনায় শহরে সৌন্দর্যহানি, পর্যাপ্ত আলো-বাতাস না থাকা, পয়োনিষ্কাশন কাজে জটিলতা ও অগ্নিঝুঁকি বাড়ছে। আর এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে মনিটরিং না করা।
কেডিএর নিয়ম অনুযায়ী, দুই কাঠা জমিতে আবাসিক ভবন নির্মাণে রাস্তার দিকে সর্বনিম্ন পাঁচ ফুট, দুই পাশে দুই ফুট সাত ইঞ্চি ও পেছন দিকে আরও তিন ফুট তিন ইঞ্চি খালি রাখতে হবে। জমির পরিমাণ বৃদ্ধির সঙ্গে দুই পাশের ও পেছনে আরও বেশি জমি খালি রাখতে হয়। কিন্তু খাতা-কলমে এ নির্দেশনা থাকলেও ৯০ ভাগ ভবনে তা মানা হয়নি।
সচেতন নাগরিকদের সংগঠন খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, নকশাবহির্ভূত অপরিকল্পিত নগরায়ণে ভোগান্তি বাড়ছে। চোখের সামনে অবৈধ ভবন তৈরি হলেও কেডিএ দেখেও না দেখার ভান করে। অনেক স্থানে ভবনের সামনের বর্ধিত অংশ সীমানা ছাড়িয়ে সড়ক ও ফুটপাতের ওপরে এসেছে। পাশাপাশি দুই ভবনের মাঝে নিয়ম অনুযায়ী খালি রাখা হয়নি।
এদিকে খুলনাকে বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে ‘ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নগরী খুলনা’ শীর্ষক সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণের সুযোগ বন্ধ করা দরকার। দ্রুত অপরিকল্পিত নগরায়নে খুলনা বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। তবে কেডিএ অথরাইজড অফিসার জি এম মাসুদুর রহমান জানান, নকশাবহির্ভূত ভবনকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। পরিকল্পিত নগরায়ণের স্বার্থে খেলাপি ও অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।