► বিশ্বের ৪২০ বিলিয়ন ডলারের বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান যথেষ্ট নিচে ► এলডব্লিউজি মানদণ্ডে দেশের মাত্র ৩৫টি ট্যানারি অন্তর্ভুক্ত
শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে চামড়া শিল্পে ১২ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে বছরে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন। গতকাল রাজধানীর ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) আয়োজিত নিজস্ব মিলনায়তনে ‘এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী চামড়াশিল্পে টেকসই রপ্তানির কৌশল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকিন আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। চামড়া খাতের সম্ভাবনা নিয়ে শিল্প উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে এ খাতে বছরে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি আয় হয়, যার বড় অংশ আসে জুতা ও চামড়াজাত পণ্য থেকে। এ খাতের আরও বড় বাজারে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। আদিলুর রহমান খান পরিবেশগত সম্মতির অভাবকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) মানদণ্ডে বাংলাদেশের মাত্র ৩৫টি ট্যানারি অন্তর্ভুক্ত। তুলনামূলকভাবে ভারতে রয়েছে ২৫৩টি, চীনে ২০০টি ও পাকিস্তানে ৪৪টি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের ৪২০ বিলিয়ন ডলারের চামড়াজাত পণ্যের বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান যথেষ্ট নিচে। এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আন্তর্জাতিক মানের সার্টিফিকেশন, ডিজিটাল ট্রেসেবিলিটি ও টেকসই উৎপাদনে জোর দিতে হবে। সরকার, বেসরকারি খাত ও উন্নয়ন অংশীদারদের সম্মিলিত উদ্যোগেই টেকসই চামড়াশিল্প গড়ে তোলা সম্ভব। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, বিসিকের সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে, এটা আমরা স্বীকার করি। এ সক্ষমতা বাড়াতে সরকারের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করা হয়েছে।
এফবিসিসিআই প্রশাসক হাফিজুর রহমান বলেন, এলডব্লিউজি সার্টিফিকেট না থাকায় আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে পারছি না। মূল প্রবন্ধের আলোচনায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাওসার চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের একটি ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারলে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) যুগ্ম সচিব আরিফুল হক জানান, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার দাঁড়াবে এক ট্রিলিয়ন ডলারে। এলডিসি থেকে উত্তরণের ফলে যেসব চ্যালেঞ্জ আসবে, তার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
বিনিয়োগের জন্য বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ সবচেয়ে উপযুক্ত অবস্থানে রয়েছে।
আলোচনায় আরও অংশ নেন কেন্দ্রীয় চামড়া গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালমা আহমেদ, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম, অস্টান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইবনুল ওয়ারা, জেনিস সুজ লিমিটেডের নাসির খান এবং বে গ্রুপের জিয়াউর রহমান।