পাইপলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল সরবরাহ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গাস্থ ডেসপাস টার্মিনাল এলাকায় এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এর মধ্য দিয়ে দেশে জ্বালানি তেল পরিবহনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনে বছরে ২৭ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল সরবরাহ করা যাবে।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, আমাদের কিন্তু খুব একটা সম্পদ নেই। কিছু প্রাকৃতিক গ্যাস ছিল, সেটা এখন ফুরিয়ে আসছে। মানবসম্পদ ছাড়া আমাদের উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ আর নেই। সেক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নতি দিয়ে আমাদের এগোতে হবে। আমাদের সম্পদ এমনিতেই কম, যা আছে সেটারও সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারছি না দুটি কারণে। একটি দুর্নীতি, আরেকটি অপচয়। যদি আমরা দুর্নীতি ও অপচয় কমাতে পারি, টেকনোলজিক্যাল প্রগ্রেস করতে পারি—তাহলে বিপুল জনসংখ্যার জন্য গ্রোথ অ্যাচিভমেন্ট সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার-ইন-চিফ মেজর জেনারেল মু. হাসান-উজ-জামান। বক্তব্য দেন বিপিসির পরিচালক ড. একেএম আজাদুর রহমান।
প্রকল্পের ব্যয় বেশি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সড়ক নির্মাণ ব্যয় অন্য দেশের তুলনায় বেশি। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায়ও অনেক বেশি। সুতরাং ব্যয় কমাতে হবে। শুধু ব্যয় বেশি এমনটা নয়, বিলম্বেও কাজ শেষ হয়। কোনো কোনো প্রকল্প ১৭ থেকে ১৮ বছর ধরেও চলছে। এসব প্রকল্প আর টেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
রক্ষণাবেক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, পাইপলাইনে ডিজেল সরবরাহের মাধ্যমে অপচয় কমবে। চুরিও ঠেকানো যাবে। এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। যদিও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। এখন প্রকল্পটি ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। আমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অভিনন্দিত করতে চাই। তারা দুরূহ প্রকল্পটি সমাপ্ত করেছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আগে পেট্রোলিয়াম প্রডাক্ট আমদানি খাতে চার-পাঁচজন বিড করতে পারত। আমরা এটা পরিবর্তন করেছি। ফলে এখন ১০-১২টি প্রতিষ্ঠান বিড করে। আমরা বছরে ১৪০০-১৫০০ কোটি টাকা সেভ করতে সক্ষম হয়েছি। এভাবে আমি যে তিনটি মন্ত্রণালয় দেখি সেখানে আমরা ৪৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে সক্ষম হয়েছি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিল বিপিসি। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে গত মার্চে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল