দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ডেঙ্গুর সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৪৯ হাজার ৪৯১। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২০২ জনের। মৃত্যুহার ০.৪০।
মৃত ব্যক্তিদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৫১.৪৮ শতাংশের বয়স ৩০ বছরের কম। ৫৭.৮৯ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে ভর্তির প্রথম দিনে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিপুলসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়ে ঘরে চিকিৎসা নেয়, এতে দেশে ডেঙ্গু রোগীর তথ্য নিয়ে স্পষ্টতা না থাকায় মৃত্যুহার অনেক বেশি। এ ছাড়া ডেঙ্গুতে একাধিকবার আক্রান্ত হওয়াও মৃত্যুর অন্যতম কারণ। বেশির ভাগ রোগী জটিল পরিস্থিতি না হলে তারা হাসপাতালে আসছে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসের ডেঙ্গু মৃত্যুর এ সংখ্যা (২০২) দেশের ইতিহাসে তৃতীয়। এর আগে ২০২৪ সালে ৫৭৫ জন, ২০২৩ সালে এক হাজার ৭০৫, ২০২২ সালে ২৮১, ২০২১ সালে ১০৫ ও ২০১৯ সালে ১৭৯ জনের প্রাণ গিয়েছিল ডেঙ্গুতে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি) শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হালিমুর রশীদ বলেন, ডেঙ্গু রোগীরা তিন থেকে ছয় দিন ধরে জ্বরে ভোগার পর হাসপাতালে আসছে।
মারা যাওয়া ১১৪ জন রোগীর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৫৭.৮৯ শতাংশই হাসপাতালে ভর্তির প্রথম দিন মারা গেছে। বেশির ভাগের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে; মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম। এরপর রয়েছে কার্ডিয়াক শক। ডেঙ্গুর ধরন হলো চারটি। ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ডেঙ্গু এখন আর শহরের রোগ নয়। এটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে, প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডেঙ্গু পরীক্ষা চালু করতে হবে। যারা পজিটিভ হবে, তাদের বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে মশা নিধনে স্থানীয় সরকারের কর্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
বিডি-প্রতিদিন/শআ