ভালো দামের আশায় নীলফামারী জেলায় মাঠের পর মাঠ উঁচু সমতল ভূমিতে শীতের আগমনের আগেই মাঠজুড়ে আগাম জাতের আলু বীজ বপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। মৌসুমের প্রথম দিকে আগাম জাতের আলু উৎপাদন হলে ভালো দাম পাওয়া যাবে এমনটাই আশা কৃষকদের। স্বল্পমেয়াদী আউশ, আগাম আমন ধান কাটা, মাড়াই শেষ করে সেই জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণের জন্য হিমাগার থেকে বীজ সংগ্রহ, জমি প্রস্তত, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করছেন তারা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এক কেজি আলু বাজারে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে পারে। এ কারণে তারা আগাম আলুর আবাদে ঝুঁকছেন।
কৃষিনির্ভর জেলা নীলফামারী। এখানকার উর্বর দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটিতে নানা ধরনের ফসল উৎপাদন করা হয়। তবে কিশোরগঞ্জ উপজেলা বহুদিন ধরেই আগাম আলুর জন্য সারাদেশে পরিচিত। স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় সেভেন জাতের আলু রোপণের ৫০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যেই তোলা যায়। বাজারে নতুন আলুর চাহিদা ও দাম দুটোই বেশি থাকায় কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে চলছে আলু বীজ বপন ও জমি প্রস্তুত এর কাজ। এতে শ্রমিকের চাহিদা বেড়েছে, বাড়ছে মজুরিও।
এ সময় রণচন্ডী ইউনিয়নের কুটিপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল ওহাব বলেন, গত বছর ধান কাটার পর ১ একর জমির আলু ৮০টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি তাতে অর্ধেক টাকা লাভ হয়েছে। এবারো বেশি লাভের আশায় ৮০শতাংশ জমিতে ৫৫ থেকে ৬০দিনে উত্তোলন যোগ্য সেভেন জাতের আলু বীজ বপন করছি।
বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক ইয়ামিন কবির বলেন, ২৪ বিঘা জমিতে আগাম আলু রোপন করছেন। বাজারে যার আলু যত আগে উঠবে, তার লাভ তত বেশি। আগুর (আগাম) আলু চাষে কোনো মাইর বা (ক্ষতির আশষ্কা) নাই।
এখানকার উচু জমি বালু মিশ্রিত হাওয়ায় এবং বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে আগাম আলু চাষে তেমন কোন ভয় থাকবে না। চড়া দামে আলু বিক্রি করে লাভবান হওয়া যাবে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, চলতি মৌসুমে ৩হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগাম জাতের আমন ধান কেটে কৃষকেরা আগাম আলু চাষে চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উচুজমিতে আলুচাষে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর রহমান জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু মাঠে রোপণ করেছে কৃষকরা। গত বছর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৭ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। গোটা জেলায় ২২ হাজার হেক্টর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন