চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে বেজে উঠেছে নির্বাচনি দামামা। ছয়টিতে বিএনপি-জামায়াত প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। বাকি আসনগুলো বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপি এখন নির্বাচনমুখী। চট্টগ্রামের সব আসনে ধানের শীষের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন নেতা-কর্মীরা। আশা করছি, সব আসনেই ধানের শীষের প্রার্থীর বিজয় হবে।’ চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমিন বলেন, প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে জামায়াতের প্রার্থীরা। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের কেন্দ্র কমিটি করা হয়েছে। জামায়াত এবং সব অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিতে কাজ করছেন। জানা যায়, চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৯টিতে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। দুটিতে এলডিপিকে সমর্থন দেওয়ার আভাস মিলেছে। বাকি তিন আসনে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করবে দলটি। এই আসনগুলো বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। কয়েক মাস আগেই প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। দুটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন বিএনপির প্রার্থীরা। ছয়টিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে জামায়াতের প্রার্থীর সঙ্গে। প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া ছয় আসনের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই)। এই আসনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চেয়ারম্যানকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। জামায়াতের হয়ে এ আসনে লড়বেন অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান। চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে বিএনপির হয়ে লড়বেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার আলমগীর। জামায়াতের প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি নুরুল আমিন। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে তীব্র লড়াই হবে বিএনপি-জামায়াতের। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী সালাউদ্দিনকে বিএনপি এবং আনোয়ারুল সিদ্দিকীকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) ও চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে বিএনপি-জামায়াত-এলডিপি ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। এই দুই আসনে বিএনপি এখনো কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। আসন দুটিতে এলডিপিকে সমর্থন দেওয়ার গুঞ্জন রয়েছে মাঠে। তাই এখানে মূল লড়াই হবে এলডিপি-জামায়াতের। এ আসন দুটিতে এলডিপির চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রমের নির্বাচন করার কথা রয়েছে। জামায়াত চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ডা. শাহাদৎ হোসাইনকে এবং চট্টগ্রাম-১৫ আসনে শাহজাহান চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছে। চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে জামায়াত প্রার্থীর হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। এ আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরীকে। জামায়াতের প্রার্থী জহিরুল ইসলাম। বিএনপির প্রার্থী এগিয়ে থাকা আসনগুলোর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী-বায়েজিদ) আসন। এ আসনে নির্ভার বিএনপির প্রার্থী। বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে। এখানে জামায়াতের প্রার্থী উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আবদুল মালেক চৌধুরী। চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে নির্ভার বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী। এখানে জামায়াতের প্রার্থী ডা. এ টি এম রেজাউল করিম। চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনেও এগিয়ে বিএনপির প্রার্থী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ। এ আসনে জামায়াতের হয়ে নির্বাচন করবেন ডা. আবু নাসের। চট্টগ্রাম-১০ (খুলশী-পাহাড়তলী) আসনে নির্ভার রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী। চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে বিএনপির হয়ে নির্বাচন করবেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ এনামুল হক। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ডা. ফরিদুল আলম। চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক এমপি সরওয়ার জামাল নিজাম। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান। চট্টগ্রাম-৩, ৬, ১১, ১৪ এবং ১৫ আসনে বিএনপি এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৩, ৬ এবং ১১ আসনে প্রতিপক্ষের চেয়ে বিএনপির অবস্থান শক্তিশালী।