কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কটি প্রকৃত সাফারি পার্কে রূপান্তরের কাজ চলমান রয়েছে, যেখানে নির্ভয়ে বিশাল বেষ্টনীতে বন্যপ্রাণী ঘুরে বেড়াবে আর দর্শনার্থীরা এনক্লোজারের ভেতর থেকে সেসব বন্যপ্রাণীর বিচরণ প্রত্যক্ষ করে আনন্দ উপভোগ করবেন।
এরই অংশ হিসেবে পার্কটিতে এবার যুক্ত হয়েছে তিনটি বাঘশাবক। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সংগ্রহ করে বাঘশাবক তিনটি ওই পার্কের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন শাবক তিনটির বিচরণ নজরদারি করাসহ প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী চিকিৎসক (ভেটেরিনারি সার্জন) হাতেম সাজ্জাদ জুলকার নাইন জানান, আফ্রিকা থেকে কার্গো বিমানে ঢাকায় আনার পর সেখান থেকে গত বুধবার সকালে বাঘশাবক তিনটিকে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। একটানা ২১ দিন এখানে থাকবে শাবক তিনটি।
নতুন অতিথি তিন বাঘশাবকচিকিৎসক জুলকার নাইন আরো জানান, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকার সময় পার হলে শাবক তিনটির শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পার্ক কর্তৃপক্ষ বুঝে নেবে। এই সময়ের মধ্যে কোনো শাবক যদি অসুস্থ প্রমাণিত হয় তবে সেটি গ্রহণ করা হবে না।
বাঘশাবক তিনটির মধ্যে একটি পুরুষ, দুটি স্ত্রী। এদের বয়স বর্তমানে তিন বছর। একটি বাঘ প্রাপ্তবয়স্ক হতে সময় লাগে চার থেকে ছয় বছর। তবে এসব শাবক এরই মধ্যে মায়ের দুধ ছেড়ে মাংস খেতে শুরু করেছে।
নতুন এই তিন অতিথিকে বর্তমানে গরুর মাংস খেতে দেওয়া হচ্ছে।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মনজুরুল আলম বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আফ্রিকা থেকে বাঘশাবক তিনটি সংগ্রহ করলেও এখনো পার্ক কর্তৃপক্ষ বুঝে নেয়নি। কারণ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরের কারণে পরিবেশ-প্রতিবেশের সঙ্গে খাপ খেতে সময় লাগে। তাই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হবে। নিয়মানুযায়ী আমরা এসব শাবক বুঝে নেওয়ার পর নির্দিষ্ট বেষ্টনীতে রাখব। অন্যান্য প্রাণীর মতোই পার্ক কর্তৃপক্ষ থেকে এদের যত্ন-আত্তি করা হবে।’
মনজুরুল আলম আরো জানান, আগে থেকে এই সাফারি পার্কে দুই জোড়া বাঘ রয়েছে। এর মধ্যে নয়ন-আঁখি এবং জয়-জ্যোতি দম্পতি পার্কে আসা দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের আনন্দ দিয়ে যাচ্ছে। নতুন করে অতিথি হিসেবে ঠাঁই পাওয়া তিন বাঘশাবকও আগামী দিনে দর্শনার্থীদের মধ্যে আনন্দ বিলাবে। ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাছের মো. ইয়াছিন নেওয়াজ বলেন, ‘বাঘশাবক তিনটি যেন এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শাবক তিনটির পৃথক নামও দেওয়া হবে।’
সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ