ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বৈঠক হতে যাচ্ছে আলাস্কায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আলাস্কার সবচেয়ে বড় শহর অ্যাঙ্কোরেজে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) এই বৈঠকে বসবেন। খবর বিবিসি, সিএনএনের।
স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের অ্যাঙ্কোরেজ শহরে হবে এ বৈঠক। তবে দুই বিশ্বনেতার এই আলোচনা থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।
আলোচনা ঠিকঠাক হলে খুব দ্রুতই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কিকে সাথে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনার কথাও বলেছেন ট্রাম্প। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ বৈঠক থেকে বাদ পড়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, তার অনুপস্থিতিতে যে কোনো সমঝোতা অর্থহীন হবে।
ইউরোপীয় নেতারা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যেন ইউক্রেনের কাছে গ্রহণযোগ্য শর্তে যুদ্ধ শেষ করার জন্য মস্কোর ওপর চাপ বাড়ান। এরইমধ্যে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হলে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে রাশিয়াকে।
শুক্রবার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ট্রাম্প তার অন্যতম প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি — ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান — বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। নিজেকে বৈশ্বিক শান্তিদূত হিসেবে তুলে ধরা ট্রাম্প আশা করছেন, পুতিনের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে এমন এক অগ্রগতি আনতে পারবেন, যেখানে অন্যরা ব্যর্থ হয়েছেন। তবে বৈঠকের একদিন আগে বৃহস্পতিবার তিনি স্বীকার করেন, বৈঠক সফল হওয়ার সম্ভাবনা তিনি মাত্র “২৫ শতাংশ” দেখছেন। অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকটি সফল হবে না, এমন ২৫ শতাংশ ঝুঁকি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
এদিকে, এই বৈঠককে এখনই পুতিনের জয় বলে মনে করছেন রুশ বিশ্লেষকরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা ও বিশ্লেষকেরা শীর্ষ বৈঠকের ঘোষণাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
পুতিনের ঘনিষ্ঠ কূটনীতিক ইউরি উশাকভ বলেন, আলাস্কা ও আর্কটিক অঞ্চলে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থগুলোর মিলন ঘটে এবং এখানে বড় পরিসরের পারস্পরিক উপকারী প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনা তৈরি হয়।
সব মিলিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, আলাস্কার এই বৈঠক আপাতদৃষ্টিতে শান্তি আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করলেও বৈঠকটি ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ এবং আন্তর্জাতিক শক্তির ভারসাম্যের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম