রংপুর নগরীর প্রাণকেন্দ্রে একই চত্বরে অবস্থিত পাবলিক লাইব্রেরি, টাউন হল, গণগ্রন্থাগার, শিল্পকলা একাডেমিসহ ১০/১২টি সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাজারো লোকজনের পদচারণে মুখর থাকে এই চত্বর। সভা-সেমিনার, সরকারি দিবসের অনুষ্ঠান, বিভিন্ন মেলা হয়ে থাকে এই চত্বরে। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের এই চত্বরে আগমন ঘটলেও এখানে নেই কোনো পাবলিক টয়লেট। ফলে এখানে আসা মানুষকে প্রাকৃতিক কাজ সারতে পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়। সিটি করপোরেশনে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার আর্থিক সহায়তায় নগরের দুটি টয়লেট নির্মাণের জন্য ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কার্যাদেশ বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে সংস্কৃতিপ্রেমীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি কমিটির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন বলেন, জনস্বার্থের উপযোগিতা বিবেচনায় রংপুর নগরীর প্রাণ কেন্দ্রে পাবলিক লাইব্রেরি ও টাউন হল চত্বরে একটি অত্যাধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা জরুরি। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ২৩ বাই ৩৩ ফুট জায়গা প্রয়োজন। এই চত্বরে জনসাধারণ ও সংস্কৃতিকর্মীদের সুবিধাজনক স্থান বিবেচনায় প্রধান সড়ক-সংলগ্ন সরকারি গণগ্রন্থাগারের দক্ষিণ পাশে এটি করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, রংপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়নি।
রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি প্রাচীনতম একটি গ্রন্থাগার। ১৮৩২ সালে কুন্ডীর জমিদাররা এই লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন। এর পরে রাজমোহন রায় চৌধুরী প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক আর্থিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে তুষভান্ডারের জমিদার রমণীমোহন রায় চৌধুরী এবং কাকিনার জমিদার মহিমারঞ্জন রায় চৗধুরী গ্রন্থাগারটির পৃষ্ঠপোষকতা করেন। এখানে ৩০ হাজারের বেশি বই, পাণ্ডুলিপি, পুথি, উৎকীর্ণলিপি ও প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ সংগৃহীত ও সংরক্ষিত ছিল। পরবর্তীতে ১৮৫৪ সালে কাকিনার জমিদার রাজা মহিমারঞ্জন রায় চৌধুরী ১ একর ১৮ শতক জমি পাবলিক লাইব্রেরির জন্য দান করেন। তখন থেকে এটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। ১৯৩৫ সালে ভারত সরকার এটিকে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে অধিগ্রহণ করে। এই চত্বরে অবস্থিত টাউন হলের বয়স প্রায় ২০০ বছর। এ ছাড়া রয়েছে আধুনিক শিল্পকলা একাডেমি।