দীর্ঘ দুই বছর বন্ধ থাকার পর আগামী বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে খুলে দেয়া হচ্ছে দেশের উঁচু পাহাড় চূড়াগুলোর অন্যতম পর্যটন স্পট কেওক্রাডং। তবে কেওক্রাডং পর্যটনকেন্দ্রটিতে ভ্রমণে এবার পর্যটকদের মানতে হবে ছয়টি শর্তাবলী।
সোমবার বিকেলে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি কেওক্রাডং পর্বত ভ্রমণে পর্যটকদের জন্য ছয়টি শর্তাবলী আরোপ করে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বান্দরবান জেলা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সমন্বয় সংক্রান্ত কোর কমিটির গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখের সভারসিদ্ধান্ত, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, রুমা, বান্দরবান পার্বত্য জেলার গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখের ০৫.৪২,০৩৯১.০০১.০৩.০১৩.২৫-৫৮৮ সংখ্যক স্মারকমূলে পাঠানো এক চিঠি এবং সদর দপ্তর, বান্দরবান রিজিয়ন, বান্দরবান সেনানিবাসের ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখের ১৪০/৩১/জিএস(ইন্ট) চিঠির আলোকে বান্দরবান পার্বত্য জেলার রুমা উপজেলার কেওক্রাডং পর্বত পর্যটনকেন্দ্রটি আগামী ১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ থেকে সব পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হলো। জনস্বার্থে এ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো।
এ সময় গণবিজ্ঞপ্তিতে ছয়টি শর্তাবলী আরোপ করা হয়। সেগুলো হলো-সার্বিক আইন-শৃখলা পরিস্থিতি বিবেচনায় রুমা উপজেলার যে সব পর্যটনকেন্দ্র উন্মুক্ত করা হয়েছে সেসব পর্যটনকেন্দ্র ছাড়া উপজেলার অন্য জায়গায় পর্যটকদের গমনাগমন নিষিদ্ধ থাকবে।
-জেলা/উপজেলা প্রশাসনের নিবন্ধিত ট্যুর গাইড ব্যতীত ভ্রমণ করা যাবে না।
-পর্যটনকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট চেকপোস্ট/পর্যটন তথ্য সেবাকেন্দ্রে চাহিত তথ্য অবশ্যই সরবরাহ করতে হবে।
-পর্যটক কর্তৃক উপর্যুক্ত নির্দেশনাসমূহ অমান্য করা হলে তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ/নিকটবর্তী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করতে হবে।
-পাহাড়ি রাস্তায় চলাচলের অনুপযোগী ও ফিটনেসবিহীন সব যানবাহন উল্লিখিত পর্যটনকেন্দ্রসমূহে চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে এবং পর্যটকবাহী সকব যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে উপজেলা প্রশাসন বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
-অযাচিত যেকোনো ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট পর্যটন সংস্থার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং পর্যটন শিল্পের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
এদিকে, দীর্ঘদিন পরে বান্দরবানের রুমা উপজেলার কেওক্রাডং পর্বতটিতে পর্যটক ভ্রমণের অনুমতি থাকায় পর্যটন ব্যবসায়ীদের মনে আনন্দ বিরাজ এবং সেই অনুযায়ী পর্যটকবাহী যানবাহন এবং খাবার হোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্টরা নতুনভাবে পরিকল্পনা করছে।
প্রসঙ্গত, পর্যটকদের যাতায়াতে সুবিধার জন্য রুমার বগালেক থেকে কেওক্রাডং পর্যন্ত পাঁকা সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ করেছে সেনা প্রকৌশল বিভাগ (ইসিবি)। কিন্তু স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’ এর সামরিক তৎপরতার মুখে জননিরাপত্তার স্বার্থে ২০২৩ সালে রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে স্থানীয় প্রশাসন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে এসব উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে খুলে দেয়া হচ্ছে কেওক্রাডং পর্যটন কেন্দ্র।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত