ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখনও ঠিকঠাক পর্তুগিজ ভাষা ঠাউরে উঠতে পারেননি কার্লো আনচেলত্তি। তবে ব্রাজিলের ফুটবলের ভাষা অনেকটাই রপ্ত করে ফেলেছেন ইতালিয়ান কোচ। এরই মধ্যে ২০২৬ বিশ্বকাপের মাস্টার প্ল্যান সাজিয়ে ফেলেছেন তিনি।
মাস ছয়েক আগে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন আনচেলত্তি। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হয়ে গোল করার পাশাপাশি রক্ষণেও তিনি দিয়েছেন বাড়তি মনোযোগ। তার কোচিংয়ে খেলা প্রথম পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটি গোল হজম করেছিল ব্রাজিল। তবে জাপানের বিপক্ষে ৩-২ গোলে হেরে যেন অন্যরকম এক সতর্কবার্তাই পেয়েছেন আনচেলত্তি। পরে অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়ে সেনেগালকে ২-০ গোলে হারিয়েছে সেলেসাওরা।
সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আনচেলত্তির কোচিংয়ে সাত ম্যাচের চারটি জিতেছে ব্রাজিল। ড্র হয়েছে এক ম্যাচ। আর তারা হেরে গেছে বাকি দুই ম্যাচ। যেখানে ১২ গোল করেছে ব্রাজিল। বিপরীতে হজম করেছে শুধু ৪ গোল।
আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় হতে যাওয়া বিশ্বকাপের জন্য রক্ষণ জমাট রাখার পথেই হাঁটতে চান আনচেলত্তি। সংবাদ সম্মেলনে সেই কথাই জোর দিয়ে বলেছেন ৬৬ বছর বয়সী ইতালিয়ান কোচ।
“ব্রাজিলের সবশেষ বিশ্বকাপ জয়ের আসরগুলোতে রক্ষণভাগের অনেক ভূমিকা ছিল। সেই দলগুলোতে প্রতিভাধর অনেকে ছিলেন, যারা খেলা উপভোগ করতেন। একইসঙ্গে তারা এটিও নিশ্চিত করতেন যেন রক্ষণ কোনোভাবে উন্মুক্ত না হয়ে যায়।”
“১৯৯৪ বিশ্বকাপের কথা আমার মনে আছে। দুজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার, পেছন দিক একদম জমাট আর সামনে বেবেতো ও রোমারিও ছিলেন পার্থক্য গড়ার জন্য। বিশ্বকাপের জন্য আমি এমনটাই ভাবছি। শক্ত রক্ষণভাগ থাকলে কোয়ালিটি খেলোয়াড়রা পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।”
বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হলেও ২০০২ সালের পর শিরোপা জিততে পারেনি ব্রাজিল। আগামী বছরও যদি ব্যর্থ হয় তারা, তাহলে বিশ্বকাপখরা বেড়ে দাঁড়াবে ২৮ বছরে! যা নিশ্চিতভাবেই হতে দিতে চান না আনচেলত্তি।
সেটি করার জন্য রক্ষণে জোর দিতে চান তিনি। তাই রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সেন্টার-ব্যাক খেললেও, ব্রাজিল দলে এডেন মিলিতাওকে রাইট-ব্যাক হিসেবে খেলানোর পরিকল্পনা করেছেন আনচেলত্তি। সামনের দিনগুলোতে নির্ভরযোগ ফুল-ব্যাক খোঁজার মিশন চালু রাখবেন তিনি।
“অন্যান্য রাইট-ব্যাকের চেয়ে মিলিতাওয়ের ধরন কিছুটা আলাদা। তার কাছ থেকে আমার কিছুটা ভিন্ন চাওয়া থাকবে। রক্ষণে আরও শক্তি বাড়াতে আমরা বিশ্বকাপে তাকে এভাবে ব্যবহার করতে পারি। তবে জাপানের বিপক্ষে ৩ গোল হজম করে আমরা ভুলগুলো বুঝতে পেরেছি। সেসব জায়গায় উন্নতির চেষ্টা থাকবে।”
বিডি প্রতিদিন/নাজিম