রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার নোহালী ইউনিয়নের পূর্ব কচুয়া ফকিরপাড়া এলাকায় মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালানো হয় ভুক্তভোগী পরিবারের ওপর। বল্লম দিয়ে পেটে আঘাত করে হত্যা করা হয় নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে। আহত হন ওই পরিবারের আরও পাঁচজন। ঘটনাটি ১১ নভেম্বর হলে আহত নুর ইসলাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ১৫ নভেম্বর। পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে না পারায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১১ নভেম্বর (মঙ্গলবার) রাত ১২টার দিকে মানিক মিয়ার বসতবাড়ির প্রাচীর টপকে ৩-৪ জন চোর ঘরে ঢুকে। তারা বারান্দা থেকে একটি প্লাটিনা মোটরসাইকেল, বিছানার নিচে থাকা ২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা এবং শোকেসে থাকা প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার লুট করে পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী বিথী বেগম সাংবাদিকদের জানান, তিনি সন্দেহভাজন রাশেদুল ইসলামকে মানিক মিয়ার বাড়ির পাশ থেকে একটি মই টেনে নিজের বাড়ির দিকে নিয়ে যেতে দেখেছেন। তার চিৎকারে আরও তিনজন লোক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
সকালে মানিক মিয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু অভিযোগের খবর জানাজানি হতেই সন্দেহভাজন পক্ষের কয়েকজন ব্যক্তি ক্ষিপ্ত হয়ে মানিক মিয়াকে এলাকায় না পেয়ে তার চাচাতো ভাই নুরুল ইসলামের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। বল্লম, ছোরা ও লোহার রড নিয়ে হামলাকারীরা নুরুল ইসলামের পেটে এবং ছোরা দিয়ে হাতে আঘাত করে। হামলা আহত নূরুল ইসলামকে বাঁচাতে এলে পরিবারের অন্যান্য লোকজনও আহত হয় ।পরে গুরুতর আহত নুরুল ইসলামকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে ১৫ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরিবারের আহত পাঁচজন সদস্য বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহতের স্ত্রী শরিফা খাতুন বলেন, আমার স্বামীকে কোনো কারণ ছাড়াই পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।
প্রত্যক্ষদর্শী তফিজ উদ্দিন জানান, নূর ইসলাম রাস্তা দিয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় রাশেদুল ও তার লোকজন বল্লম-ছোরা নিয়ে হামলা চালায়। একের পর এক কোপাতে থাকে। পরিবারের লোকজন তাকে বাঁচাতে গেলে সবাইকে মারধর করে। রাসেল মিয়া বলেন,রাশিদুল, সুজন, মানু রিপনসহ হাতে বল্লম, ছোড়া নিয়ে ৮/১০ জন এসে হামলা চালায়।
নিহতের চাচাতো ভাই ও চুরি মামলার বাদি মানিক মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,এটা পরিকল্পিত হত্যা। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি এটাই অপরাধ। তাদের পরিবারের নপুলিশ সদস্য থাকায় আমরা পুলিশের কোন সহযোগিতা পাই নাই। তারা চুরির ঘটনা স্বীকার করার পরও গায়ের জোড়ে এই হত্যাকান্ড ঘটায়। হামলার ঘটনায় থানায় দাখিলকৃত মামলার বাদী মোকাররম হোসেন বলেন, এজাহার দেয়ার পরে পুলিশ এসে শুধু তদন্ত করে গেছে।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আল এমরান জানান, মারপিটের ঘটনায় যে মামলা হয়েছে সেটি হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম