ব্রাজিলিয়ানরা ফুটবল নিয়ে বদ্ধ উন্মাদ। এ খেলা সামনে এলে তারা জীবনের সবকিছু ভুলে যায়। এমনকি দূরদূরান্তের পথ পাড়ি দিতে দ্বিতীয়বার ভাবে না। নিজ দলের ম্যাচ দেখতে বাড়ি, জমি বিক্রি করে তারা ছুটে যায় স্টেডিয়ামে। এমন ঘটনা বিশ্বকাপ এলে অনেক শোনা যায়। কাতার বিশ্বকাপে এমনই একজন ব্রাজিলিয়ানের সঙ্গে কথা হয়েছিল। নিজের বাড়ি বিক্রি করে তিনি এসেছিলেন ব্রাজিলের সাম্বা ছন্দের ফুটবল দেখতে। বিশ্বকাপ তো বটেই, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়েও একই উন্মাদনা ব্রাজিলিয়ানদের মধ্যে। লাতিন আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে এসেছেন অনেকেই। বোটাফোগো, ফ্লেমেঙ্গো, পালমেইরাস ফ্লুমিনেন্সের খেলা দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন তারা। ব্রাজিলের চিরায়ত সাম্বা ছন্দের দাপট দেখা যাচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপে।
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ক্লাব খেলছে ব্রাজিল থেকে, চারটি। এ ছাড়া দুটি করে ক্লাব আছে আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ড, স্পেন, পর্তুগাল, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইতালি এবং মেক্সিকো থেকে। তবে দাপট দেখাচ্ছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলোই। ছন্দময় ফুটবল খেলে প্রতিপক্ষদের তেমন কোনো সুযোগই দিচ্ছে না তারা। এ গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাস। তিন ম্যাচের একটিতে জয়, দুটিতে ড্র। কোনো ম্যাচেই পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পায়নি দলটি। বি গ্রুপের রানার্সআপ হিসেবে নকআউট পর্ব খেলবে আরেক ব্রাজিলিয়ান ক্লাব বোটাফোগো। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে দুটিতেই জয় পেয়েছে তারা। হেরেছে ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন পিএসজির কাছে। ডি গ্রুপের শীর্ষ দল ফ্লেমেঙ্গো। তারা তিন ম্যাচে দুটি জয় এবং একটি ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। হারিয়েছে চেলসির মতো ইউরোপের শীর্ষ দলকে। এফ গ্রুপ থেকে ফ্লুমিনেন্সও নকআউট পর্ব প্রায় নিশ্চিত করে নিয়েছে। গত রাতে তারা দক্ষিণ আফ্রিকার দল মেমেলোডি সানডাউনের মুখোমুখি হয়েছে। পরাজয় এড়াতে পারলেই নকআউট পর্বে পৌঁছে গেছে ফ্লুমিনেন্স। এ ব্রাজিলিয়ান ক্লাব আগের দুই ম্যাচে একটি জয় ও একটিতে ড্র করেছে। চার ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ১১ ম্যাচ খেলে কেবল একটিতে হেরেছে। জয় পেয়েছে ৬টিতে। ড্র করেছে বাকি চারটিতে।
ব্রাজিলিয়ান সাম্বা ছন্দের দাপট দেখা গেলেও আর্জেন্টিনার ক্লাবগুলো খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি ক্লাব বিশ্বকাপে। দিয়েগো ম্যারাডোনার ক্লাব বোকা জুনিয়র্স গ্রুপ পর্ব খেলেই বিদায় নিয়েছে।
সি গ্রুপে তারা বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরেছে। ড্র করেছে বেনফিকার সঙ্গে। এমনকি নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড সিটি ক্লাবও রুখে দিয়েছে বোকা জুনিয়র্সকে।
ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলো নকআউট পর্ব নিশ্চিত করলেও তাদের সামনে কঠিন লড়াই। শেষ ষোলোর লড়াইয়ে দুই ব্রাজিলিয়ান ক্লাব মুখোমুখি হচ্ছে, পালমেইরাস-বোটাফোগো। এ ছাড়া আরেক ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লেমেঙ্গো খেলবে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট দল বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের লড়াই শেষ হয়ে যাবে আজ। ২৮ জুন থেকে শুরু হবে নকআউটের লড়াই।