ভারতের জুতা ও চামড়াজাত পণ্যের অন্যতম কেন্দ্র ভারতের আগ্রায় ব্যবসায়ীরা বড় ধাক্কায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় চামড়া ও জুতার ওপর ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক ঘোষণার পর থেকে স্থবির হয়ে পড়েছে রফতানি। মাত্র চার মাস আগে যারা মার্কিন বাজারে ব্যবসা বাড়াতে শুরু করেছিলেন, এখন তাঁদের ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিতের খবর পাচ্ছেন প্রতিদিনই।
২৫ শতাংশ শুল্কের সময়েও ভারতের আশা ছিল কিন্তু এক ধাক্কায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন ভারতের উৎপাদকরা। আগ্রা, কলকাতা, চেন্নাই, কানপুর মিলিয়ে হাজার হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার উৎপাদন এখন ঝুলে আছে অনিশ্চয়তার মধ্যে।
শরৎ-শীত মৌসুম আগ্রার সবচেয়ে ব্যস্ত সময়। ইতিমধ্যেই মার্কিন ক্রেতারা ক্রয়াদেশ স্থগিত করছেন বা বাতিল করে দিচ্ছেন। অনেকেই চীন ও ভিয়েতনামের দিকে ঝুঁকছেন, যেখানে শুল্ক এখনও তুলনামূলক কম (চীনে ৩০ শতাংশ, ভিয়েতনামে ২০ শতাংশ)। উৎপাদকদের অভিযোগ, শুল্কের বোঝা ভাগ নিতে ক্রেতারা চাপ দিচ্ছেন, যা প্রায় অসম্ভব।
শুধু সরাসরি আমেরিকায় রফতানি নয়, পরোক্ষ ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত। কানপুরের ট্যানারি মালিকরা জানাচ্ছেন, মার্কিন বাজারের জন্য প্রস্তুত হওয়া চামড়ার কাজ মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা এখন রাশিয়া ও দেশীয় বাজারে নতুন করে মনোযোগ দিচ্ছেন। একসময় রাশিয়ার বাজার ছিল আগ্রার বড় ক্রেতা। তবে শিল্পমহলের অনেকে মনে করছেন, ট্রাম্পের শুল্ক কৌশলগত এবং আমেরিকা-ভারত আলোচনায় সমঝোতা হলে পরিস্থিতি আগের মতো ফিরতে পারে।
রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার জন্যই ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা, দাবি ওয়াশিংটনের। ভারতের পাল্টা বক্তব্য, জাতীয় স্বার্থ ও বৈশ্বিক বাজারদর মাথায় রেখেই বাণিজ্যনীতি ঠিক করা হয়।
এখন ব্যবসায়ীরা চেয়ে আছেন ২৭ অগস্টের দিকে, যেদিন থেকে কার্যকর হবে নতুন শুল্ক। তত দিনে সমঝোতার দরজা খুলবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল