আমাদের পরিকল্পনা আছে প্রপার উইকেট প্রস্তুত করার। আমরা একটা নির্দিষ্ট ওয়েতে খেলি, এ জন্য আমাদের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্পিন উইকেট তৈরির দরকার নেই। প্রপার উইকেট বানিয়ে টেস্ট ম্যাচ জেতার চেষ্টা করব - ফিল সিমন্স, হেড কোচ বাংলাদেশ
ফিল সিমন্সের সঙ্গে নতুন করে দুই বছরের চুক্তি নবায়ন করেছে বিসিবি। চুক্তি নবায়নের পর ক্যারিবীয় হেড কোচের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২ টেস্ট ম্যাচ সিরিজ। আগামীকাল সিলেটে শুরু হচ্ছে প্রথম টেস্ট। ২০২৫ সালে টাইগারদের এটাই প্রথম টেস্ট। নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে টাইগাররা লাল বল ও সাদা পোশাকের টেস্ট খেলতে নামার আগে গতকাল ৬২ বছরে পা দিলেন ফিল সিমন্স। টাইগার হেড কোচ জন্মদিনের দিন মিডিয়ার মুখোমুখি হন। শিষ্যদের কাছে টাইগার হেড কোচ জন্মদিনের উপহার দিসেবে জয় উপহার চেয়েছেন, ‘তারা যদি উপহার দিতে চায়, প্রথম ম্যাচটি জিতলেই হবে (হাসি)। আমার এটুকুতেই হবে।’ সিলেটে আগামীকাল প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট চট্টগ্রামে ২৮ এপ্রিল-২ মে।
সিলেটের অভিষেক টেস্ট হয়েছিল ২০১৮ সালে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই টেস্টটি হেরেছিল বাংলাদেশ। সাত বছর পর সেই সিলেটে ফের মুখোমুখি হচ্ছে দুই দেশ। মাঝের বছরগুলোতে দুই দল ৩টি টেস্ট খেলেছে পরস্পরের বিপক্ষে। দুটি মিরপুরে এবং একটি হারারেতে। ২০২১ সালে হারারের টেস্টটি ছিল দুই দলের সর্বশেষ টেস্ট। বাংলাদেশ জিতেছিল ২২০ রানে। ১৫০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেও টেস্টকে বিদায় বলেছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে এবার ১১তম টেস্ট সিরিজ খেলবে। আগের ১০ সিরিজে কোনো দলই আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি। উভয় দল চারটি করে সিরিজ জিতেছে। অবশ্য টেস্ট জয়ের হিসাবে এগিয়ে বাংলাদেশ। টাইগাররা জিতেছে ৮টি, জিম্বাবুয়ে ৭টি এবং ড্র হয়েছে ৩টি। এবার ১৯তম টেস্টে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। মুখোমুখি হচ্ছে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এখানকার উইকেট বরাবরই হার্ড ও বাউন্সি। টেস্ট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে সিলেটের উইকেট কেমন হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে টাইগার হেড কোচ স্পোর্টিং উইকেটের কথা বলেন মিডিয়াকে, ‘আমাদের পরিকল্পনা আছে প্রপার উইকেট প্রস্তুত করার। আমরা একটা নির্দিষ্ট ওয়েতে খেলি, এ জন্য আমাদের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্পিন উইকেট তৈরির দরকার নেই। প্রপার উইকেট বানিয়ে টেস্ট ম্যাচ জেতার চেষ্টা করব। স্পিন উইকেট বা পেস উইকেট তৈরির দরকার নেই। আমরা উইকেট দেখেছি আজ (গতকাল), উইকেট শক্ত, ভালো মনে হচ্ছে। আমাদের দেখতে হবে কাল সকালে কেমন হয়।’ ২০১৮ সালের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারের ম্যাচে টাইগারদের সফল বোলার ছিলেন বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসে ৬টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। তাইজুল এবারও রয়েছেন স্কোয়াডে। মেহেদি হাসান মিরাজও রয়েছেন। স্পিনাররা ভালো করলেও স্পিন উইকেট চাইছেন না টাইগার কোচ।
টেস্ট ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ে পরিচিত প্রতিপক্ষ। যদিও ১৮টি টেস্ট খেলেছে। ফলাফল হয়েছে ১৫টি। সর্বশেষ ১০ টেস্টেই ফল হয়েছে এবং বাংলাদেশ জিতেছে ৭টি। পরিসংখ্যানের পাশাপাশি শক্তিমত্তায় এগোনো নাজমুল বাহিনী এবারও পরিচিত কন্ডিশনে ফেবারিট হিসেবে খেলবে। সিরিজে দল কেমন খেলবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ৬২তম জন্মদিন পালন করা সিমন্স বলেন, ‘আমরা টেস্ট দলটাকে যেদিকে নিয়ে যেতে চাই, সে রকমই খেলতে চাই।’ অবশ্য টাইগাররা এখন ক্রিকেটে সংস্পর্শেই রয়েছে। মার্চে পাকিস্তানের মাটিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলেছে। দেশে ফেরার পর ক্রিকেটাররা ব্যস্ত ছিলেন প্রিমিয়ার ক্রিকেট নিয়ে। ছন্দে রয়েছে নাজমুল বাহিনী। সিলেটে দলের প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্টি ঝড়েছে টাইগার কোচের কণ্ঠে, ‘প্রথম থেকেই প্রস্তুতি দারুণ হচ্ছে। এখানে সুযোগ-সুবিধা দারুণ, স্বপ্নের মতো। যেভাবে চাইবেন সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া যাচ্ছে। আমরা ভালোভাবেই প্রস্তুতি নিতে পারছি।’
দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজ। সিরিজে পরিষ্কার ফেবারিট টাইগাররা। ক্রিকেটপ্রেমীরা ভাবছেন সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশ করবে নাজমুল বাহিনী। সিমন্স সেই বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না, ‘হোয়াইটওয়াশ নিয়ে আমি ভাবছি না। আমি সামনের ম্যাচ ধরে ভেবে থাকি। প্রথম টেস্ট আগে জিতি। এরপর সিরিজ জয়ের কথাও ভাবব। প্রথম টেস্টের প্রথম দিনটা জিততে চাই। সিলেট পর্ব শেষ করে চট্টগ্রাম টেস্ট নিয়ে ভাবব।’