হামজা দেওয়ান চৌধুরী এলেন, খেললেন, খেলালেন এবং দর্শকের মন জয় করে ফিরে গেলেন। প্রশ্ন উঠতে পারে, ভারতের বিপক্ষে যেখানে ম্যাচ ড্র হয়েছে সেখানে আবার মন জয় কীভাবে? হ্যাঁ, বাংলাদেশ জয় না পেলেও অভিষেক ম্যাচে হামজা শিলংয়ে যে অসাধারণ নেপুণ্য প্রদর্শন করেছেন তা যেন ম্যাজিক শো। এক ম্যাচ খেলেই নিজের জাত চিনিয়েছেন। বাংলাদেশ মাতিয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরে গেছেন তিনি। গতকাল সকালে ঢাকা থেকে সিলেট, এরপর বিকালের দিকে বাংলাদেশ ছেড়েছেন হামজা। আপাতত জাতীয় দলে খেলা না থাকায় তাঁকে ফিরে যেতে হলো। সেখানে গিয়ে শেফিল্ড ইউনাইটেডের ক্যাম্পে যোগ দেবেন।
যাওয়ার আগে সতীর্থদের সঙ্গে আগাম ঈদের কোলাকুলি করে যান। বলে যান ঈদ মুবারক বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। এটি বাংলাদেশের হোম ম্যাচ হলেও ভেন্যু এখনো ঠিক হয়নি। বাফুফের এক কর্মকর্তা বলেন, হামজার সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলবেন তিনি। সময়মতো তাঁর সফরের শিডিউল ঠিক হবে। হামজা যাওয়ার আগে নাকি সতীর্থদের বলে গেছেন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে। প্রয়োজনীয় টিপস দেবেন। হামজা শুধু মাঠেই খেলেননি। কোচ হাভিয়ের কাবরেরাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। ফিরে গেলেও কোচের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব আলাপই করবেন হামজা। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে কোনো দেশে এবারই প্রথম ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা ফুটবলার খেললেন। অভিষেকেই তিনি দর্শকের মন জয় করেছেন। কয়েক দিনের সফরে নিজেকে খেলোয়াড়দের সঙ্গে যেভাবে মানিয়ে নিয়েছিলেন তা দলীয় ম্যানেজার আমের খানের কথায় অসাধারণ। তিনি বলেন, ‘হামজার আচার-আচরণে মনে হয়নি তিনি বিখ্যাত কোনো ফুটবলার। এতটা সহজভাবে মিশে গেছেন যে মনে হয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলাররা তার কত চেনা। ঘরোয়া ফুটবলে খেলা বিদেশিরাও লোকালদের সঙ্গে এমন স্বাভাবিক আচরণ করেন না। এটাই গ্রেটদের গুণ।’ ভারতের বিপক্ষে খেলতে ১৭ মার্চ বাংলাদেশে আসেন হামজা। সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে নামেন তিনি। সেদিনই মায়ের জন্মস্থান হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার স্নানঘাটে যান। ১৮ মার্চ ঢাকায় পা রাখেন। ২১ মার্চ দলের সঙ্গে শিলংয়ে পৌঁছান। ২৫ মার্চ এক ম্যাচ খেলেই ভারত কাঁপিয়েছেন হামজা। যদিও সতীর্থরা সুযোগ হাতছাড়া করায় জেতা সম্ভব হয়নি। তবে ফুটবলপ্রেমীদের প্রত্যাশা, হামজাতেই খুলে যাবে বাংলাদেশের ফুটবলে বন্ধ দুয়ার।