রাস্তা
রাস্তায় বৃষ্টি হোক, নগরের জিলা স্কুল রোড
সেখানের পুকুরগুলো মরে গেছে
গলির সুন্দর ফুলেরা একটানা ঝরনার মতো
নিজেদের ভিজিয়ে একা একা
কুতকুত খেলত বলে আকাশ নামত
দৃষ্টির কড়ই গাছে
পরম প্রার্থনা পাগল পাখি দূরের জানালা খোলো, ডানা মেলো
এই জমে থাকা পানির ড্রেন
ভাঙা ভাঙা ফলের দোকান গরম নতুন বাজার
সেকালেও ছিল ইলিশ ক্রেতার ভিড়
একটা সিনেমার ঘর আর একটা কসাইয়ের ঘর
এই অশরমের দৃষ্টি নামিয়ে রাত্রিতে জোছনা কেতন
কে আসে কার কাঁকনের শব্দে গান গাই
চলছি দিগন্ত নিয়ে স্বপ্নের ছায়াছবি দৃশ্যত চোখের প্লাবনে
গুপ্ত সুখ হেয়ার সেলুনে কাটিকুটি করে
সারা রাত অন্ধ গোঙরানো শব্দে শব্দে একা একা বৃষ্টিতে
বৃষ্টিতে, রাস্তায় বগা বাড়ির রাস্তায়
পেনসিল
আঁকছি এক মেঘবতী;
অরণ্যের ভেতর থেকে অভিমানী রাত
জোছনা থেকে আকাশ দেখে রাত্রির মল্লিকা;
আঁকছি সুরমা নদী-
পাহাড় ঝরনার রঙ;
এক বনমোরগের সাদাকালো
ছবিটাও-
মাছ আঁকতে গিয়ে কানকে-খেকোও!
খরগোশ পেনসিলে-
ডমিস্টিক এনিমেল
গৃহপালিত হাঁস মুরগি গাধা গরু
হাতির অরণ্য পাহাড় প্রবাহিত ঝরনা-ধারা
ডমিস্টিক এনিমেল
হেঁয়ালি সন্ধ্যায় ইলিশের মতো
সারি সারি পটকার ভাজা
গৃহ তার পথ হারিয়েছে
পথে পথে নষ্ট ফুলের তোড়া
হেসে উঠছে অপরূপ
দেশটার আরেক নাম জাহাঙ্গীর হোটেল
ভিড়ের ভেতর অচেনা আমি
খাবার প্লেটে ভিরমি খাওয়া
মুখের মিছিল
মনে পড়ে, স্কুলবেলার রচনা,
‘দি কাউ ইজ এ ডমিস্টিক এনিমেল’
খামারের ভেতর তবু খুঁজছি বৃথা
গুচ্ছ গ্লাডিওলাস
মল্লিকা, তোমাকে
দেখি না অনেক দিন অনেক বছর
পাতার থরথরে বর্ষায়-
একটা ঘর থেকে আরেকটা ঘরের সুখে-অসুখে
দেখি না চন্দ্রমল্লিকা, বিশ্বাসের নীলঘুম
রজনীগন্ধ্যার রাত তার কম্পিত সুন্দর গোলাপ
দেখি না, দেখা হয় না আমাদের-
রেললাইন শানকিপাড়ার বাজার- সেনবাড়ির রোড
টাউন হল থেকে নতুন বাজার পিয়ন পাড়ার নির্মম
জামগাছটির মৃত্যুতে কান্নারত পাখিটির গান-
সুন্দর, ফুল, প্রেম দেখি না কত দিন
কত বছরের অপেক্ষা নিয়ে জোছনার সৌরভ মেখে সে হাসে।
তিমির নিবাসে গোলাপ তোমাকে দেখি না কতদিন-
মল্লিকা, তোমাকে দেখি না কতদিন!
ব্রহ্মপুত্রের পায়ে
পার্ক ফুসকা দিয়ে হাসে, মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্র চর জাগায়
চায়ের দোকান মাংসের দিকে ব্যাটবল চত্বর-
ঐ পাড়ের জীবন এই পাড়ের গান মিলেমিশে গায়
বৈশাখ আসে ঈদ কেটে কেটে ধানের গন্ধ মেখে।
ব্রহ্মপুত্র জীবন্ত কাব্য; শিশুর মতো ফুল ফোটে -ফোটায়
মেয়েটাকে আমি চিনি, সে আমার প্রেমিকা ছিল
পাশের কামরাঙা গাছটি কেন প্রেমিক বলে ডাকে
তার সবুজ তৃণে ভ্রমর এঁকে দুখী হই- সুখী হই
পার্ক দিয়ে পা আঙুল আর চতুরতা পাখির ঠোঁটের
এক ভয়াবহ ছোবল
যার বিষ আস্তে আস্তে কাঁদে আর কাঁদায়;
বর্ণের সরপুঁটি স্যাঁতসেঁতে শ্যাওলা জলে
টুনটুনি শালিক চড়ুই এখনো আসে বসন্ত কোকিল
বৃষ্টিতে ব্যাঙ, গানওয়ালাদের দল
পার্ক আর ব্রহ্মপুত্রের গজলে
সঙ্গীরাও তাদের সখীদের কাজল পরায়
জয়নুলের রঙ তুলি থেকে
পার্কজুড়ে ব্রহ্মপুত্র হাটে তার
সুখ ও বিরহের দোতরা নিয়ে
পায়ে, ব্রহ্মপুত্রের পায়ে