আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে আগামী ৩ ও ৭ ডিসেম্বর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এই দুই মামলায় গ্রেফতার হওয়া ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে হাজিরের পর প্রসিকিউসনের আবেদনে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শুনানির দিন ধার্য করেন।
একইসঙ্গে এই দুই মামলায় পলাতক আসামি পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া, এই দুই মামলায় পলাতক অন্য আসামিদের জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউসনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এ সময় অন্য প্রসিকিউটর ও আসামি পক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
সকালে ঢাকা সেনানিবাসে স্থাপিত সাময়িক কারাগার থেকে বাংলাদেশ জেলের বিশেষ প্রিজন ভ্যানে করে এই দুই মামলার আসামি ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালের আনার প্রেক্ষাপটে ট্রাইব্যুনালকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের আলাদা দুই মামলায় সাবেক স্বৈরাচার শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালকসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গত ৮ অক্টোবর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
এই দুই মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী দুই মামলার আসামি সেনা কর্মকর্তাকে হাজিরের পর গত ২২ অক্টোবর তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-১।
গুমের এই দুই মামলায় যে ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তারা হলেন— র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
অন্যদিকে, জুলাই আগস্টে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় গ্রেফতার লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত বিন আলম মুনকে আগামীকাল ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/কেএ