শেরপুর সদর উপজেলার কামারচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর চরে ব্রহ্মপুত্র নদীর শাখা দশআনি নদীর ওপর মাত্র ৫০ ফুট একটি ব্রিজ না থাকায় পাঁচটি গ্রামের মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এ চরাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে অবকাঠামোহীন যোগাযোগব্যবস্থা স্থানীয়দের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলেছে। উৎপাদিত ধান, সবজি ও অন্যান্য কৃষিপণ্যের বাজারজাত করতেও নানামুখী বাধার মুখে পড়ছেন কয়েকশ কৃষক।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শেরপুরের ডিগ্রীর চর, আখ্রাবাদসহ জেলা-সীমান্তসংলগ্ন জামালপুরের ৪ নম্বর চর এলাকার মোট প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রতিদিন দশআনি নদী পাড়ি দিতে বাধ্য হন একটি মাত্র ছোট নৌকায় ভরসা করে। এতে ঝুঁকি ও দুর্ভোগে নিত্যদিনই ভুগছেন যাত্রী, শিক্ষার্থী ও কৃষকেরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ২০ বছর আগে এখানে একটি কাঠের সেতু ছিল। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে আর কোনো সেতু নির্মাণ করা হয়নি। দীর্ঘদিনের দাবি থাকা সেতুটি এখনো বাস্তবায়িত না হওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থায় কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে নদীর ওপারের এলাকায় পাকা রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মৌলিক অবকাঠামোও গড়ে ওঠেনি।
উর্বর মাটির কারণে চরাঞ্চলে সবজির বাম্পার ফলন হয়। কিন্তু নৌকায় সীমিতভাবে পণ্য পরিবহনের কারণে বাজারে নিতে না পারায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন কৃষকেরা। অনেক সময় বেগুন, ধান, গম, পাটসহ বহু পণ্য নষ্ট হয়ে যায়।
প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যেতে একই নৌকার ওপর নির্ভর করতে হয়। শিক্ষার্থীরা জানায়, নৌকার ভিড় ও ঝুঁকির কারণে প্রায়ই বই-খাতা ভিজে যায়, দেরিতে পৌঁছাতে হয় ক্লাসে। বর্ষায় জল বাড়লে অনেক অভিভাবকই সন্তানদের স্কুলে যেতে নিষেধ করেন।
কামারচর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরজু মিয়া বলেন, দশআনি নদীর ওপর একটি ব্রিজ স্থানীয় মানুষের প্রাণের দাবি। সব সরকারের নেতারাই ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু আজো কেউ করেননি।
এলজিইডি শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দশআনি নদীতে ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন ও বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল