‘শাপলা পেলে নির্বাচন, না পেলে নয়’— প্রতীক ইস্যুতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এমন অবস্থানকে ‘চাপ সৃষ্টির রাজনীতি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেছেন, প্রতীক নিয়ে এনসিপির কৌশলগত হিসাব গুরুত্বপূর্ণ। তারা বলছেন— শাপলা পেলে নিবন্ধন, না পেলে নয়। শাপলা পেলে নির্বাচন, না পেলে নয়— এটি ‘চাপ সৃষ্টির রাজনীতি’, যা নতুন দল হিসেবে তাদের পরিচিতিকে আরো উচ্চকিত করছে।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিওতে এ কথা বলেন তিনি।
জিল্লুর রহমান বলেন, জনপ্রশাসনে বদলি-পদায়ন, উপদেষ্টা পর্যায়ের পক্ষপাত, ইসির পক্ষপাত— এসব অভিযোগ দিয়ে তারা (এনসিপি) নির্বাচনী পরিবেশকে প্রধান ইস্যু বানাতে চায়। এই অবস্থান ভবিষ্যৎ জোট রাজনীতির দরজাও খোলা রাখে। কারণ, প্রতীক না হলে তারা অন্য প্রতীক বা জোটের প্রতীকে যেতে চায় না। এ কথা বলে তারা নিজেদের আলাদা ব্যান্ডিং দৃঢ় করছে। কিন্তু এই কৌশলের একটা বড় ঝুঁকিও আছে। প্রথমত প্রতীকের প্রশ্নে দীর্ঘ অচল অবস্থা দলের সাংগঠনিক প্রস্তুতিকে স্লো করতে পারে। দ্বিতীয়ত নির্বাচনী ক্যালেন্ডার যত এগোবে, প্রতীকের অনিশ্চয়তা, প্রার্থীদের মাঠপর্যায়ের প্রচারণা, ছাপা সামগ্রী ও ভোটার মনে চেনা, সবকিছুকে প্রভাবিত করবে। তৃতীয়ত ইসিকে অবৈধ বলতে বলতে শেষ মুহূর্তে সমঝোতায় যেতে হলে রাজনৈতিক বার্তার ধার কমে যেতে পারে।
তিনি আরো বলেন, এনসিপি সম্ভবত এটিও হিসাব করছে প্রতীকের প্রশ্নে কঠোর থাকা তাদের তরুণ সমর্থকদের কাছে নীতি-নিষ্ঠার সংকেত দেবে। নির্বাচন কমিশনের অবস্থানেও এক ধরনের নীতিগত ধারাবাহিকতা দেখা যায়। সাম্প্রতিক গ্যাজেট, নতুন তালিকা, নৌকা স্থগিত; শাপলা তালিকায় নয়— এসব সিদ্ধান্তে তারা একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করতে চাইছে। জাতীয় প্রতীকের কেন্দ্রীয় উপাদানকে ভোটের প্রতীকে পরিণত না করার নীতি শুধু শাপলা নয়, ভবিষ্যতে অন্য কোনো রাষ্ট্র চিহ্নের কেন্দ্রীয় অংশকে প্রতীক হিসেবে ঠাঁই না দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়।