যুক্তরাষ্ট্র ‘যুদ্ধ উস্কে দিচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড’ ক্যারিবীয় সাগরে মোতায়েনের পর তিনি এই মন্তব্য করেন।
এর আগে ২৪ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ভূমধ্যসাগর থেকে বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর নির্দেশ দেন। যা সর্বোচ্চ ৯০টি যুদ্ধবিমান বহন করতে সক্ষম। এই রণতরী যুক্তরাষ্ট্রের মাদকবিরোধী অভিযানে অংশ নেবে বলে জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে মাদুরো বলেন, “তারা একটি নতুন চিরস্থায়ী যুদ্ধ তৈরি করছে। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আর কোনও যুদ্ধে জড়াবে না, অথচ এখন নিজেরাই যুদ্ধ তৈরি করছে।”
ওয়াশিংটনের দাবি—এই সামরিক তৎপরতা মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান। তবে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালিত ১০টি বিমান হামলায় অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছে। শুক্রবারের সর্বশেষ হামলায় ছয়জনকে হত্যা করা হয়েছে বলে হেগসেথ জানিয়েছেন। হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল ট্রেন দে আরাগুয়া নামের একটি অপরাধী সংগঠনের নৌযান, যাকে যুক্তরাষ্ট্র “সন্ত্রাসী সংগঠন” হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা যুক্তরাষ্ট্রের এসব হামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেক দেশও ওয়াশিংটনের পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। তাদের মতে, এই আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইন ও যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের পরিপন্থী হতে পারে।
মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা—ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দল থেকেই প্রেসিডেন্টের এককভাবে হামলার নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, “যদি কেউ মাদকবাহী নৌকা ধ্বংস হতে না দেখতে চায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাঠানো বন্ধ করুক।”
লন্ডনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা চ্যাথাম হাউসের জ্যেষ্ঠ ফেলো ড. ক্রিস্টোফার সাবাতিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক তৎপরতা আসলে ভেনিজুয়েলায় শাসন পরিবর্তনের ইঙ্গিত। এটি মূলত ভয় দেখানোর কৌশল—যাতে ভেনিজুয়েলার সেনাবাহিনী ও মাদুরোর ঘনিষ্ঠরা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
ট্রাম্পও ইঙ্গিত দিয়েছেন, ওয়াশিংটন স্থল অভিযান চালানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/একেএ