আলজেরিয়ায় এক অভূতপূর্ব ঘটনা জনমনে তীব্র আলোড়ন তুলেছে। নাদিয়া নামের এক নারী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ফেল করার পর নিজেকে দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে গৃহবন্দি করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি এক প্রতিবেশীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ও সিভিল ডিফেন্স টিম তাঁকে উদ্ধার করে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ জানিয়েছে, উদ্ধারকৃত নাদিয়ার ঘর ছিল অস্বাস্থ্যকর ও এলোমেলো। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, তাঁর বসবাসের পরিবেশ ছিল এতটাই নোংরা যে ভেতরে প্রবেশকারীরা বিস্মিত হয়ে পড়েন।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, নাদিয়ার কাছে কেউ গেলে তিনি চিৎকার করতেন, কখনো আক্রমণাত্মক আচরণও করতেন। একই বাড়িতে তাঁর ভাইবোনরা বসবাস করলেও তাঁরা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হন।
শেষ পর্যন্ত স্থানীয় এক বাসিন্দার তথ্য অনুযায়ী পুলিশ ও সিভিল ডিফেন্স টিম তাঁকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায় এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
আলজেরিয়ার সম্প্রচারমাধ্যম আল-নাহার জানিয়েছে, ১৯৯৯ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে নাদিয়া উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ফেল করেন। এরপর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে তিনি নিজেকে ঘরে বন্দি করে রাখেন। বর্তমানে তাঁর বয়স ৪৩, চুল পেকে গেছে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর দেশজুড়ে ক্ষোভ ও অবিশ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ প্রশ্ন তুলছেন—এত দীর্ঘ সময় ধরে পরিবারের চোখের সামনে একজন মানুষ কীভাবে একাকী বন্দি থেকে গেলেন, অথচ সমাজ বা রাষ্ট্র কোনো পদক্ষেপ নিল না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে বলেছেন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতির কারণেই নাদিয়ার এই পরিণতি। একজন মন্তব্য করেছেন, “যদি ফেল করার পর সে মনোবিজ্ঞানীর কাছে যেত, হয়তো জীবনটা বদলে যেত।” অন্যরা তদন্ত দাবি করেছেন—পরিবারের অবহেলা ও সামাজিক দায় কোথায় ছিল, তা বের করতে।
ঘটনাটি আলজেরিয়ায় নতুন করে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, পারিবারিক সহায়তা এবং সমাজের দায়িত্ব নিয়ে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক