জেনেভায় বিশ্বের প্রথম আইনি বাধ্যতামূলক প্লাস্টিক দূষণ রোধ চুক্তি প্রণয়নের আলোচনায় শেষ দিনে এসে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) আলোচনার শেষ ঘণ্টাগুলোতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো সম্ভাব্য সমঝোতার পথ খুঁজে দেখছে।
পানামা, কেনিয়া, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যসহ উচ্চাভিলাষী চুক্তি চাওয়া দেশগুলো বুধবার প্রস্তাবিত খসড়া প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের অভিযোগ, খসড়ায় প্লাস্টিক দূষণের সম্পূর্ণ জীবনচক্র—পলিমার উৎপাদন থেকে শুরু করে বর্জ্য নিষ্পত্তি ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি—সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো পেট্রোলিয়াম, কয়লা ও গ্যাস থেকে তৈরি নতুন (ভার্জিন) প্লাস্টিক উৎপাদনে সীমা আরোপের বিরোধিতা করছে। তবে অন্য দেশগুলো এ উৎপাদন সীমিত করা ও প্লাস্টিক পণ্য ও ক্ষতিকর রাসায়নিকের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণের পক্ষে।
বিশ্ব বন্যপ্রাণী তহবিলের প্রতিনিধি জয়নাব সাদান জানান, প্রায় তিন বছরের আলোচনার পরও দেশগুলোর অবস্থান একে অপরের থেকে অনেক দূরে রয়ে গেছে। পানামা নতুন খসড়াকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করে সম্পূর্ণ পুনর্লিখনের দাবি জানিয়েছে।
সৌদি আরব জানিয়েছে, চুক্তির পরিধি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়। এ বৈঠকে ১০০০-এর বেশি প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় হওয়া আন্তঃসরকারি আলোচনার পঞ্চম বৈঠকও ব্যর্থ হয়েছিল।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) সতর্ক করেছে, কোনো পদক্ষেপ না নিলে ২০৬০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক উৎপাদন তিনগুণ হয়ে যাবে, যা সাগর দূষণ, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও জলবায়ু পরিবর্তনকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
নরওয়ের জলবায়ু ও পরিবেশমন্ত্রী আন্দ্রেয়াস এরিকসেনসহ কয়েকজন আলোচক জানিয়েছেন, সব পক্ষেরই সমঝোতার জন্য কিছুটা ছাড় দেওয়া প্রয়োজন। তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আমেরিকা’স প্লাস্টিক মেকারস কাউন্সিল চুক্তিতে উৎপাদন সীমাবদ্ধতার ধারা থাকলে যুক্তরাষ্ট্র তা অনুমোদন নাও করতে পারে বলে সতর্ক করেছে।
অন্যদিকে কলম্বিয়ার আইনপ্রণেতা হুয়ান কার্লোস লোজাদা মনে করেন, দুর্বল চুক্তির চেয়ে কোনো চুক্তি না হওয়াই ভালো।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল