ইতালির দক্ষিণে প্রাচীন রোমান নগরী পম্পেই ৭৯ খ্রিস্টাব্দে ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির ভয়াবহ বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ধারণা ছিল—এরপর শহরটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত ছিল। কিন্তু নতুন প্রত্নতাত্ত্বিক খননে পাওয়া প্রমাণ বলছে, ওই বিপর্যয়ের পরও কিছু মানুষ ধ্বংসস্তূপে ফিরে এসে বসবাস করেছিল।
পম্পেই প্রত্নতাত্ত্বিক উদ্যানের চলমান খননে শহরের দক্ষিণ প্রান্তের ইনসুলা মেরিডিওনালিস এলাকায় মাটির বাসন, টালি, মার্বেল খণ্ড, রুটি বানানোর চুলা ও রান্নার পাত্র পাওয়া গেছে। এগুলো বিস্ফোরণের পর পুনর্ব্যবহার করে বানানো হয়েছিল।
এসব নিদর্শন থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের ওপর টিকে থাকা ভবনের উপরের তলায় কিংবা দৃশ্যমান অংশে মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। এছাড়া একটি মুদ্রা যাতে রোমান সম্রাট মার্কাস অরেলিয়াসের (১৬১ খ্রিস্টাব্দ) ছবি রয়েছে, ইঙ্গিত দিচ্ছে—বিস্ফোরণের মাত্র কয়েক দশক পরই কেউ কেউ পম্পেইয়ে ফিরে আসে। খননে পাওয়া এক খ্রিস্টীয় প্রতীকখচিত প্রদীপ ও রুটি বানানোর ছোট চুলা প্রমাণ করছে, এ বসতি ছিল দীর্ঘমেয়াদি, শুধু অস্থায়ী শিবির নয়।
গবেষকদের মতে, শহরটি আবারও বড় আঘাত পায় ৪৭২ খ্রিস্টাব্দে আরেকটি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাতে। এরপর ধীরে ধীরে জনবসতি হারায়। যদিও ৭৯ খ্রিস্টাব্দের বিস্ফোরণের আগেও এখানে প্রায় ২০ হাজার মানুষ বসবাস করত। বর্তমানে এর দুই-তৃতীয়াংশ খনন করে প্রায় ১,৩০০ জনের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব অনুসন্ধান পম্পেইয়ের ‘অদৃশ্য শহর”’-এর চিত্র তুলে ধরছে—যেখানে ধ্বংসের পরও জীবন থেমে থাকেনি। নতুন খনন জানাচ্ছে, প্রাচীন পম্পেই কেবল অতীতের স্থিরচিত্র নয়; বরং ধ্বংসের মধ্যেও টিকে থাকার এক বাস্তব কাহিনি। সূত্র : সিএনএন
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল