গাজীপুরের শ্রীপুরে পার্টস ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেনকে আটকের প্রতিবাদে শ্রীপুর-বরমী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। এ সময় তারা ওই সড়কের বরামা চৌরাস্তা এলাকায় র্যাবের গাড়ি আটকিয়ে আটক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এতে সড়কের উভয় পাশে যানজট লেগে যায়। গতকাল বিকাল ৫টা থেকে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন শ্রীপুর উপজেলার বরমী মধ্যপাড়া গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে। তিনি বরামা চৌরাস্তায় অটোরিকশা পার্টসের ব্যবসা করেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী জানান, বিকালে র্যাব সদস্যরা দুটি গাড়িতে এসে মোশারফের দোকানে ঢুকে তাকে অস্ত্রসহ আটকের কথা জানায়। র্যাবের গাড়িতে অস্ত্র এনে মোশারফ হোসেনকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। তবে কী ধরনের অস্ত্র ছিল তা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ। এ খবর পেয়ে বরামা এলাকার নারী, পুরুষ, ব্যবসায়ীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে র্যাবের গাড়ি আটকে রাখেন। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছেও তাদের সরাতে পারেনি। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে কয়েকজনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। তারা দাবি করেন, জহিরুল ইসলাম লিটনের নির্দেশেই র্যাব সদস্যরা ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেনকে অস্ত্রসহ আটক করে। র্যাব সদস্য ও জহিরুল ইসলাম লিটনের বিচারের দাবিতে তারা ওই আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুল বারিক বলেন, ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেনকে অনেক আগেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কেন তাকে র্যাব আটক করল। তবে তার কাছে অস্ত্র ছিল কি না তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
র্যাব-১ গাজীপুর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কমান্ডার পুলিশ সুপার (এসপি) কে এম এ মামুন খান চিশতী বলেন, র্যাব উত্তরা টিম ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেনকে আটক করে। আমরা ঘটনাস্থলে আছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে যৌক্তিক না অযৌক্তিক। তারপর থানায় নিয়ে যাওয়া হবে। থানা থেকে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
প্রসঙ্গত স্থানীয়রা জানান, বরামা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে জহিরুল ইসলাম লিটন ২০২৩ সালের ৯ জুলাই অস্ত্রসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। শুক্রবার রাতে বরামা এলাকায় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে আতঙ্ক তৈরি করে। এর প্রতিবাদে ওই দিন রাত ৩টা পর্যন্ত স্থানীয়রা একই স্থানে বিক্ষোভ করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে তাদের সরিয়ে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।