রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে বড় ধরনের সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য একটি নীতিমালা তৈরি করেছে অর্থবিভাগ। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, এখন থেকে কোনো শীর্ষ আমলা এসব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বা পরিচালক হতে পারবেন না। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নজিরবিহীন কেলেঙ্কারি ও অর্থ পাচার হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুশাসনের অভাব ও অদক্ষ পরিচালনার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নিয়েছে। খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান ও পরিচালক নিয়োগের জন্য একটি সরকারি নির্বাচন কমিটি গঠন করা হবে। একজন পরিচালক সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন; মেয়াদ হবে তিন বছর। পরপর দুই মেয়াদ পূর্ণ করার পর তিন বছরের বিরতি ছাড়া কেউ পুনরায় নিয়োগ পাবে না। একই নিয়ম চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। প্রত্যেক পরিচালকের কর্মদক্ষতা প্রতি বছর মূল্যায়ন করবেন চেয়ারম্যান। এ মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করবে পরিচালকের পরবর্তী বছর পদে বহাল থাকতে পারবেন নাকি বিদায় নেবেন। অন্যদিকে চেয়ারম্যানের কর্মদক্ষতা পর্যালোচনা করবেন মন্ত্রী অথবা উপদেষ্টা ও সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা। নতুন নীতিমালায় পরিচালক হওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু কঠোর শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। অর্থনীতি, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, মানি মার্কেট, ক্যাপিটাল মার্কেট, করপোরেট গভর্ন্যান্স, ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, ব্যবসা প্রশাসন, কৃষি, শিল্প, আইন ও তথ্যপ্রযুক্তি এসব খাত থেকে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের বাছাই করা হবে।