দেশের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম পাখি সিঁদুরে ফুলঝুরি। ছোট্ট এ পাখিটি এলাকাভেদে সিঁদুরে লাল পিঠ, সিঁদুরে-পিঠ ফুলঝুরি বা লাল পিঠ ফুলঝুরি নামেও পরিচিত। এরা আমাদের দেশের আবাসিক পাখি। পাখিটির ইংরেজি নাম Scarlet-backed Flowerpecker আর বৈজ্ঞানিক নাম Dicaeum cruentatum. বাংলাদেশ ছাড়াও এ পাখির দেখা মেলে ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, চীনসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। গত জুলাইয়ে মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া বন থেকে সিঁদুরে ফুলঝুরির ছবি তোলেন শৌখিন ফটোগ্রাফার খোকন থৌনাউজম। তিনি জানান, ক্ষুদ্র এ পাখির দেহের দৈর্ঘ্য মাত্র ৮.৫ থেকে ৯ সেন্টিমিটার। ওজন ৭ থেকে ৮ গ্রাম। দেখতেও খুব সুন্দর। পুরুষ পাখির গলা সাদা, বুক-পেট সাদাটে, খাটো লেজের আগা কালো, মাথার তালু হয়ে পিঠ ও লেজের গোড়া পর্যন্ত সিঁদুররাঙা এবং চোখের চারপাশ থেকে শুরু করে ঘাড় হয়ে ডানার ওপরটা কালো। আর স্ত্রী পাখি একনজরে লালচে-বাদামি, তবে বুক ও পেট সবুজে-হলুদ। উভয় পাখির চোখ, চঞ্চু ও পা কালো। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখিগুলো দেখতে মায়ের মতো, তবে এদের কোমর লাল নয়; চঞ্চু গোলাপি। সব ধরনের বন ও বনের আশপাশে এদের দেখা মেলে। দিবাচর ও বৃক্ষচারী এ পাখিগুলো একাকী বা জোড়ায় থাকে। ডালপালার আড়ালে ঘুরে বেড়ায়। তাই তাদের দেখা পাওয়া বেশ কষ্টকর। এরা ফুলের মধু বেশি পছন্দ করে। তা ছাড়া কীটপতঙ্গ, মাকড়সা, ফল ইত্যাদি খেয়ে জীবনধারণ করে।
ফটোগ্রাফার আরও জানান, মার্চ থেকে আগস্ট এদের প্রজননকাল। এ সময় এরা ভূমি থেকে ৫-১০ মিটার উঁচুতে কোনো গাছের সরু ডালে বাসা বাঁধে। ২ থেকে ৩টি ডিম পাড়ে। ডিম থেকে ছানা ফোটে ১০ থেকে ১৪ দিনে। এরা এক মৌসুমে তিনবার পর্যন্ত ছানা ফোটাতে পারে। ছানা উড়তে শেখে ১৩ থেকে ১৪ দিনে। ২২ থেকে ২৪ দিনে ছানাগুলো আকাশে উড়ে বেড়ায়।