গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোগড়া এলাকার জায়ান্ট নিট ফ্যাশন লিমিটেড অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের প্রতিবাদে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। ফলে ওই মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে দীর্ঘ যানজটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। পরে যৌথ বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ছাড়া শ্রীপুরের নয়নপুরে কারখানার অপারেটরকে মারধরের বিচার ও ১২ দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে এক্সিস নিটওয়্যারস লিমিটেড নামের কারখানার শ্রমিকরা। জানা যায়, জায়ান্ট নিট ফ্যাশন লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষ সার্বিক নিরাপত্তা, কারখানার সম্পত্তি এবং জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে শ্রম আইন মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।
পুলিশ, শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন আগে ওই কারখানার শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে কারখানার তিন কর্মকর্তাকে মারধর করেন শ্রমিকরা। এ ঘটনার জেরে শনিবার থেকে ওই কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কারখানা বন্ধ ঘোষণার খবর শুনে সকাল ৮টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা প্রথমে কারখানার সামনে পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এ সময় প্রায় আধা ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের এসপি এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, একটি কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করেছিল।
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই এলাকায় আশপাশের কয়েকটি কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্মীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এদিকে, শ্রীপুরের নয়নপুরে কারখানার অপারেটরকে মারধরের বিচার ও ১২ দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে এক্সিস নিটওয়্যারস লিমিটেড নামের কারখানার শ্রমিকরা। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ শুরু করেন।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, এক্সিস নিটওয়্যারস লিমিটেড নামের কারখানার অপারেটর মোশারফ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিয়ে বেলা ১১টার দিকে প্রকৃতির ডাকে কারখানার শৌচাগারে যান। শৌচাগারে সময় বেশি কাটানো হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সুপারভাইজার আল আমিন। একপর্যায়ে অপারেটর মোশারফকে মারধর করা হলে অসুস্থতা বোধ করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় তানিয়া মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
এ ছাড়াও শ্রমিকরা সম্পূর্ণ ছুটির টাকা, ঈদে ১২ দিনের ছুটি, ১ হাজার টাকা হাজিরা বোনাস, সুপারভাইজার ফৌরদৌস, আল আমিন, নজরুল ও সোহাগকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়াসহ ১২টি দাবি উপস্থাপন করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ও অভিযুক্ত সুপারভাইজার আল-আমিনের শাস্তির দাবিতে কারখানার প্রায় দুই হাজার শ্রমিক বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, শ্রমিকরা যে দাবি উপস্থাপন করেছেন তা নিয়ে আলোচনা করার আশ্বাস দেওয়া হলে তারা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যায়। এরপর বেলা পৌনে ৩টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।