অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প ও অর্থ পাচার দেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে রপ্তানি বহুমুখীকরণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজার শক্তিশালী করত হবে। বিশ্বের বাণিজ্যিক ব্যবস্থা রাজনীতিকরণ হচ্ছে। সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার জন্য বাংলাদেশকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন থেকে ভারত পর্যন্ত সব দেশের সঙ্গে আলাদা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কে প্রবেশ করতে হবে। গতকাল রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘অর্থনীতির পুনর্বিন্যাস বিষয়ে টাস্কফোর্সের সুপারিশ’সংক্রান্ত কনফারেন্সের প্রথম সেশনে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন বলেছেন, বিগত সময়ে দেশের অর্থনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছিল। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প ও অর্থ পাচার এ দেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি করেছে। তিনি বলেন, ব্যাংকিং সেক্টর ও নানা অবকাঠামো নির্মাণে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। অর্থনীতি শক্তিশালী করতে আমাদের রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ ও শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের বেশির ভাগ কাঁচামাল বিদেশ থেকে আসে। শ্রম উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, পণ্যের উৎপাদন ব্যয় কমানো এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে রপ্তানি বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে।
সিপিডি চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান বলেন, ট্রাম্প চীনের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক চাপাতে পারেন, কিন্তু যদি তিনি অন্য কোথাও কোনো রাজনৈতিক চুক্তি করেন তবে তিনি এটিকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারেন। কিন্তু আপনি ৩০ শতাংশ অ্যাকসেসের সুবিধা নিয়েছেন। তাই এটিও একটি সমস্যা যা আপনাকে সমাধান করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা জিব বের করে বসে আছি চীনা রপ্তানির ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়ানো হলে আমরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে সক্ষম হব। তবে আমি মনে করি না যে খেলাটি এভাবে খেলা হবে। উচ্চ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি অন্য বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা শক্তিশালী দেশগুলো রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন টাস্কফোর্সের দুই সদস্য গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান ও র্যাপিডের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক। তাঁরা রপ্তানি খাতের সম্প্রসারণে যথাযথ নীতি প্রণয়নে জোর দেন। সেলিম রায়হান বলেন, তৈরি পোশাক খাতেরও সম্প্রসারণের সুযোগ আছে। দেশে যে পোশাক তৈরি হয়, তা মূলত তুলাভিত্তিকি; যদিও বিদেশে কৃত্রিম সুতাভিত্তিক পোশাকের বাজার আছে। একইসঙ্গে তৈরি পোশাক খাতকে যে ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, অন্য খাতেও সে ধরনের সুযোগ দেওয়া হোক।