পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ অভিযোগ করে বলেছেন, আফগানিস্তান ভারতের হাতের পুতুল হয়ে পাকিস্তানে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। কাবুলকে কড়া হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, কাবুল ইসলামাবাদে আক্রমণ শানাতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে ৫০ গুণ শক্তিশালী জবাব দেওয়া হবে। মঙ্গলবার পাকিস্তানের জিও নিউজ প্রোগ্রাম ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথ’-এ কঠোর ভাষায় শান্তি বৈঠকে আফগান প্রতিনিধিদলের সমালোচনা করেন খাজা আসিফ।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গত শনিবার পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যকার দ্বিতীয় দফা শান্তি আলোচনায় কোনো রফা হয়নি।
এরপরই আসিফ আফগানিস্তান নিয়ে ওই অভিযোগ করার পাশাপাশি শান্তি চুক্তি থেকে বারবার পিছিয়ে আসার জন্য আফগান আলোচকদের নিন্দা করলেন। নয়াদিল্লি কাবুলকে নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
পাকিস্তানের পত্রিকা দ্য ডন লিখেছে, আসিফের অভিযোগ, ‘চার দিন ধরে অথবা গত সপ্তাহে যখনই আমরা কোনো চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছি, আলোচকরা সেটি নিয়ে কাবুলকে জানানোর পরই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করা হয়েছিল এবং চুক্তিটি প্রত্যাহার করা হয়েছিল।’ তার কথায়, ‘আলোচনা ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা চলেছে। আমাদের কাছে চুক্তি ছিল। কিন্তু তারপর তারা কাবুলকে ফোন করে সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটাল।’ পাকিস্তানি মন্ত্রী আফগান আলোচকদের সহযোগিতামূলক আচরণের প্রশংসা করেছেন এবং তারপর কাবুল নেতৃত্বের দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়েছেন। তিনি বলেন, আমি তাদের (আফগান) প্রতিনিধিদলের প্রশংসা করব, কিন্তু কাবুলের যারা রশি টানছেন এবং পুতুলের নাটক মঞ্চস্থ করছেন তারা দিল্লির নিয়ন্ত্রণে আছেন। আফগানিস্তানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ছায়া যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে বলেও দাবি করেছেন খাজা আসিফ। তিনি বলেন, কাবুল সরকারের কর্তৃত্বের অভাব আছে বলেই তার বিশ্বাস। আসিফ দাবি করেছেন, ভারত তাদের পশ্চিম সীমান্তে পরাজয়ের ক্ষতিপূরণ কাবুলের মাধ্যমে করছে। -রয়টার্স
সেখানকার জান্তা (আফগানিস্তান) কয়েকজন ভারত সফরে গিয়ে তাদের মন্দির পরিদর্শন করেছেন। ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে একটি কম তীব্র যুদ্ধে জড়াতে চায়। আর এর জন্য তারা কাবুলকে ব্যবহার করছে। আফগানিস্তানের সঙ্গে বৈরিতা আরও বাড়বে পাকিস্তানে তাদের হামলার হুমকির বিষয়ে কি বলবেন জিজ্ঞেস করা হলে আসিফ বলেন, আফগানিস্তান ইসলামাবাদের দিকে তাকালে আমরা তাদের চোখ উপড়ে ফেলব। তারা সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে পারে। তারা ইতোমধ্যেই তা করেছে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। তবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখনো তলানিতে। গত ১৮ অক্টোবর কাতারের রাজধানী দোহায় প্রথম দফার শান্তি বৈঠকে বসেছিল পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান। তবে দীর্ঘ বৈঠকের পরও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি দুই পক্ষ। এরপরই সীমান্ত এলাকায় শান্তিপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে গত শনিবার থেকে তুরস্কে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে বসে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। কিন্তু সেই বৈঠকেও কোনো সমাধান বেরিয়ে আসেনি। -রয়টার্স