অবশেষে ইরান পেরেছে। যা ছিলো অসাধ্য বহু সাধনায় তাকেই করায়ত্ত করেছে আয়াতুল্লা আলি খামেনির দেশ। এবার আকাশে উড়েছে তেহরানের সেই পাখি। যে মহাপতঙ্গের পেটের ভেতর থাকবে টনকে টন রসদ। নিজস্ব প্রযুক্তি আর নকশায় বানানো কার্গো বিমান এবার আকাশে উড়েছে। অনেকেই তাই কৌতূহলী, কি আছে ইরানের এই আরাধ্য বিমানটিতে? তারা কি পারবে পশ্চিমা বিশ্বকে টেক্কা দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে?
ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি কার্গো বিমান সিমোর্গ আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষামূলক উড়ান শুরু করেছে। দ্রুতই বিমানটি দেশটির পণ্যবাহী বিমান বহরে যুক্ত হতে চলেছে।
মঙ্গলবার মধ্য ইরানের শাহিন শহর এলাকার একটি বিমানঘাঁটিতে এই উড়ান পরীক্ষা শুরু হয়। অনুষ্ঠানে ইরানের প্রতিরক্ষা ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইরানের সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন (সিএএ) জানিয়েছে, বিমানটিকে দেশের বিমান বহরে যোগ দেওয়ার চূড়ান্ত অনুমতি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মোট ১০০ ঘণ্টা পরীক্ষামূলক উড়ান সম্পন্ন করতে হবে।
প্রেস টিভির খবরে বলা হয়েছে, সিএএ প্রধান হোসেইন পুরফারজানেহ মঙ্গলবার জানান নিজস্ব প্রযুক্তিতে সিমোর্গ বিমান বানাতে ১৫ বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। এই সাফল্যের মাধ্যমে ইরান বিশ্বের সেই ২০টিরও কম দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। যাদের নিজস্ব নকশায় বিমান তৈরি করার সক্ষমতা রয়েছে।
ফারসি পুরাণ ও সাহিত্যের পৌরাণিক পাখি সিমোর্গ নামে রাখা হয়েছে এই বিমানটির নাম। এটিতে রয়েছে দুটি ২৫শ' হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন। এটি ৬ মেট্রিক টন (মত) পণ্য ৩৯শ' কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত বহন করতে পারে। বিমানটির সর্বোচ্চ টেকঅফ ওজন হলো ২১.৫ মেট্রিক টন।
২০২২ সালের মে মাসে বিমানটি প্রথম 'ফাস্ট-ট্যাক্সি টেস্ট' সম্পন্ন করেছিল। তখন থেকেই বিমানটির প্রস্তুতকারক সংস্থা, অর্থাৎ ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সিএএ থেকে 'টাইপ সার্টিফিকেট' বা বিমানটির উড়ানযোগ্যতার চূড়ান্ত সনদ পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সিমোর্গকে একটি চটপটে, হালকা ও দ্রুতগামী বিমান হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। যার উচ্চ পণ্য বহন ক্ষমতা এবং ইরানের আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নকশা রয়েছে। এই বিশেষ সুবিধার জন্য এটি জরুরি চিকিৎসা পরিবহনসহ গুরুত্বপূর্ণ সেবার জন্য অত্যন্ত আদর্শ বলে মনে করা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই বিমান ইরানের স্থল ও নৌবাহিনীর দেশের বিভিন্ন ঘাঁটির মধ্যে সেনা বা সরঞ্জাম পরিবহনের সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে। তাদের বিশ্বাস, ভবিষ্যতে সিমোর্গ স্বল্পপাল্লার যাত্রী পরিবহনের কাজেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল