যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র পাঠাবে। তবে তা সরাসরি নয় বরং পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মাধ্যমে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে ন্যাটো জোট এবং ইউক্রেনের সঙ্গে ওয়াশিংটনের নতুন একটি চুক্তি হয়েছে। ‘আমরা অস্ত্র পাঠাচ্ছি ন্যাটোকে, আর ন্যাটো এসব অস্ত্রের দাম ১০০ শতাংশ পরিশোধ করছে। সুতরাং আমরা যা করছি তা হলো, যে অস্ত্রগুলো বাইরে যাচ্ছে সেগুলো ন্যাটোর কাছে যাচ্ছে। এরপর ন্যাটো সেগুলো ইউক্রেনকে দেবে আর অস্ত্রগুলোর মূল্যও ন্যাটো চুকাবে’, বলেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানেন এমন দুই কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ব্যবহার করে ট্রাম্প এবার প্রথম সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রভান্ডার থেকে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র পাঠাতে যাচ্ছেন। এ ক্ষমতা প্রেসিডেন্টকে জরুরি প্রয়োজনে মিত্র দেশকে সরাসরি অস্ত্র দেওয়ার সুযোগ দেয়। প্রাথমিকভাবে পাঠানো অস্ত্রের মূল্য ৩০ কোটি ডলারের কাছাকাছি হতে পারে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা। এসব অস্ত্রের মধ্যে থাকতে পারে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রের মতো প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা এবং মাঝারি পাল্লার আক্রমণাত্মক রকেট, তবে কোনো অস্ত্র চূড়ান্তভাবে দেওয়া হবে- সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা রয়েছে একটি বৈঠকে। এখন পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন কেবল সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদিত অস্ত্রই ইউক্রেনে পাঠিয়েছে।
এদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এক জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ-এর ওই কর্মকর্তা পার্কিং লটে হাঁটছিলেন, এমন সময় অজ্ঞাতনামা এক হামলাকারী কাছে এসে তাকে একাধিক গুলি করে পালিয়ে যায়। -বিবিসি
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সিসিটিভি ফুটেজে সেই দৃশ্য দেখা গেছে।
এসবিইউ নিহত ব্যক্তির নাম প্রকাশ না করলেও ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তি হচ্ছেন কর্নেল ইভান ভোরোনিচ। এসবিইউ সাধারণত ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও পাল্টা গোয়েন্দা তৎপরতা পরিচালনা করে- যা যুক্তরাজ্যের এমআই৫-এর মতো। তবে ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এই সংস্থাটি রাশিয়ার অভ্যন্তরে গোপন অভিযান ও লক্ষ্যভিত্তিক হত্যাকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। গোপন সূত্রের বরাতে ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, এমনকি বিবিসিকে পর্যন্ত জানিয়েছে যে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়ার উচ্চপদস্থ জেনারেল ইগর কিরিলোভকে হত্যার পেছনে তাদের হাত ছিল। চলতি বছর আরও এক রুশ জেনারেল, ইয়ারোস্লাভ মস্কালিক, মস্কোতে গাড়ি বোমা হামলায় নিহত হন। এই ঘটনার জন্য ক্রেমলিন সরাসরি কিয়েভকে দায়ী করলেও, ইউক্রেন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। এসবিইউ এবং কিয়েভ পুলিশ- কোনো পক্ষই এ হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে কিছু জানায়নি। কিয়েভ পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে। হামলাকারীর পরিচয় শনাক্তে তদন্ত চলছে এবং তাকে আটক করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। এসবিইউ বলেছে, ‘এই অপরাধের পেছনের সব তথ্য উদ্ঘাটন এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনতে আমরা ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু করেছি।’