পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে বিরল এক ধূমকেতু যার নাম থ্রিআই-অ্যাটলাস। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, এটি আমাদের সৌরজগতের বাইরের কোনো তারকা ব্যবস্থা থেকে এসেছে। পৃথিবীর জন্য কোনো ঝুঁকি না থাকলেও এর গতিপথ ও উৎপত্তি নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে।
নাসা জানিয়েছে, ধূমকেতুটি আগামী ২৯ অক্টোবর পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি আসবে। তবে এর দূরত্ব থাকবে প্রায় ১৭ কোটি মাইল যা পৃথিবীর জন্য একেবারেই নিরাপদ। এর এক দিন পর ৩০ অক্টোবর এটি সূর্যের সবচেয়ে নিকটে আসবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধূমকেতুর কক্ষপথ হাইপারবোলিক অর্থাৎ এটি সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে ফিরে আসবে না; বরং সৌরজগৎ পেরিয়ে আবার মহাশূন্যে হারিয়ে যাবে।
নাসার তথ্যমতে, ধূমকেতু থ্রিআই/অ্যাটলাস গঠিত হয়েছিল অন্য এক তারকা ব্যবস্থায়। পরে কোনো মহাজাগতিক সংঘর্ষের ফলে এটি মহাশূন্যে নিক্ষিপ্ত হয় এবং লাখ লাখ বছর ভেসে বেড়ানোর পর এখন আমাদের সৌরজগতে প্রবেশ করেছে।
এই ধূমকেতুটি ১ জুলাই আবিষ্কার করেন চিলির রিও হুর্তাদোতে অবস্থিত নাসা-অর্থায়িত অ্যাটলাস টেলিস্কোপ দলের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। পরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালটেক ও পালোমার অবজারভেটরির তথ্য যাচাই করে এটির উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়।
ধূমকেতুটির নামের ‘থ্রিআই’ অংশটি বোঝায় এটি তৃতীয় পরিচিত ইন্টারস্টেলার (সৌরজগতের বাইরের) বস্তু, আর‘অ্যাটলাস’ নামটি এসেছে এর আবিষ্কারক দলের নাম থেকে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, থ্রিআই-অ্যাটলাসের কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াসের আকার সর্বোচ্চ ৫.৬ কিলোমিটার, যা বরফ ও ধূলিকণায় গঠিত। সূর্যের কাছাকাছি আসায় এর চারপাশে গ্যাস ও ধূলার উজ্জ্বল মেঘ তৈরি হচ্ছে—যা ধূমকেতুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
আবিষ্কারের সময় এটি ঘণ্টায় প্রায় ১ লাখ ৩৭ হাজার মাইল (প্রায় ২ লাখ ২১ হাজার কিলোমিটার) বেগে চলছিল। সূর্যের দিকে এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে এর গতি আরও বাড়ছে বলে জানিয়েছে নাসা।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই ধূমকেতুর বিশ্লেষণ আমাদের সৌরজগতে বাইরের মহাকাশীয় বস্তুর আগমন ও তার গঠনের প্রক্রিয়া বোঝায় নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল