ফিলিস্তিনিদের পক্ষাবলম্বন তথা গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার নিন্দা ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য মাহমুদ খলিলকে (৩০) গ্রেফতার এবং অকথ্য হয়রানির ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ মিলিয়ন ডলার দাবিতে ফেডারেল কোর্টে ১০ জুলাই মামলা হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ফিলিস্তিনি ইমিগ্র্যান্ট খলিলের গ্রিনকার্ড থাকা সত্ত্বেও গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটানস্থ নিজ বাসার সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে ঘিরে তুমুল বাদানুবাদের পাশাপাশি আইনি লড়াই চলে বেশ কয়েক সপ্তাহ। খলিলের দোষ, তিনি গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ-কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এজন্য তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু আইনি লড়াইয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
মামলায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ছাড়াও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি, আইস এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টকে অভিযুক্ত করা হয়েছে বেআইনী আচরণ এবং নিদারুণ কষ্ট প্রদানের জন্য। সংবিধান প্রদত্ত অধিকার হরণের চেষ্টাও চালানো হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদ কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস থেকে শুরু হবার পর তা সারা আমেরিকায় শিক্ষাঙ্গনে বিস্তৃত হয়েছিল। সেই আন্দোলনে অনেক ইসরায়েলিও অংশ নেন।
খলিলকে গ্রেফতারের পর আরো ক’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আন্দোলনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল, স্থগিতের মতো আচরণেও লিপ্ত হয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। অর্থাৎ বাক-ব্যক্তির স্বাধীনতা হরণের নির্লজ্জ আচরণে লিপ্ত হয়েছিলেন ট্রাম্প প্রশাসন।
খলিলের দায়েরকৃত এই মামলার মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বেআইনী পদক্ষেপকে স্থায়ীভাবে থামিয়ে দেওয়ার একটি পন্থা বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নিরা। বলেছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা পার পেয়ে যাবেন— এটা মনে করার কারণ নেই। কারণ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।
মামলার ব্যাপারে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ত্রিসিয়া ম্যাকলোলিন বলেছেন, খলিলের আচরণে ইহুদি শিক্ষার্থীরা ভীতির মধ্যে নিপতিত হয়েছিলেন। স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, তারা আইন লঙ্ঘনের কোনো আচরণ করেনি। প্রচলিত আইন অনুসরণ করেছেন মাত্র।
খলিল গণমাধ্যমে বলেছেন, বেআইনীভাবে আর একজনকেও গ্রেফতার করা হবে না— এমন নিশ্চয়তা চাই। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসন যা করছে তা যুক্তরাষ্ট্র সমাজ-ব্যবস্থাকে সন্ত্রস্ত করেছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল