মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের পরিবেশ নীতিমালার সমালোচনার জেরে ১৩৯ জন সরকারি কর্মচারীকে বাধ্যতামূলক প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠিয়েছে পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (ইপিএ)।
শুক্রবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য বলা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কর্মীদের স্বাধীন মত প্রকাশ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব কর্মী প্রকাশ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে চিঠি দেওয়ায় এবং তাতে সরকারি পদবি ব্যবহার করায় তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইপিএ-র কয়েকশ কর্মী ও সদ্য চাকরি হারানো ব্যক্তিদের স্বাক্ষর করা একটি চিঠি জনসমক্ষে আসে। ‘ঘোষণাপত্র: অসম্মতির ঘোষণা’ শিরোনামের ওই চিঠিতে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিবেশসংক্রান্ত নীতিমালার তীব্র সমালোচনা করা হয়। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, সরকার পরিকল্পিতভাবে পরিবেশ রক্ষার নিয়ন্ত্রণ শিথিল করছে, দূষণকারী শিল্পগোষ্ঠীর স্বার্থে বৈজ্ঞানিক গবেষণার তথ্য উপেক্ষা করছে এবং ইপিএ-র ভেতরে কর্মীদের ওপর ভয়ের সংস্কৃতি চাপিয়ে দিচ্ছে।
কর্মীদের এই চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রশাসনের এমন পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশগত ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করবে। প্রথমে চিঠিটি ইপিএ প্রশাসক লি জেলডিনকে পৃথকভাবে পাঠানো হলেও, পরে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়। যদিও বৃহস্পতিবার রাতের পর চিঠির সর্বশেষ প্রকাশিত সংস্করণ থেকে স্বাক্ষরকারীদের নাম মুছে ফেলা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ইপিএ কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘সরকারের নীতিমালা অবৈধভাবে বাধাগ্রস্ত করা, নাশকতা বা সরকারের কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত করার কোনো সুযোগ নেই। সংস্থার ভেতরে এমন কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে ইপিএ-র জিরো টলারেন্স নীতি আছে’।
ইপিএ আরও জানিয়েছে, চিঠিতে সরকারি পদবি ও পরিচয় ব্যবহার করে অনৈতিকভাবে অবস্থান নেওয়া হয়েছে, যা জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করতে পারে। এ কারণেই ১৩৯ জন কর্মীকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে, ইপিএ-র ভেতরে বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণাও এসেছে। সংস্থাটি পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে তাদের গবেষণা দপ্তর বিলুপ্ত করছে এবং কয়েক বিলিয়ন ডলারের গবেষণা অনুদান বাতিল করা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী, নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া সহজ করা এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
সূত্র : রয়টার্স।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত