ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে সোহরাব হোসাইন আবির (২৭) নামে এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। এসময় দাঙ্গাবাজরা চাতলপাড় বাজারের রড-সিমেন্টের দোকানসহ ৫টি দোকান ব্যাপক ভাংচুর ও লুটতরাজ চালায়।
দুপুরে উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের চাতলপাড় বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সোহরাব চাতলপাড় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ সাধারণ সম্পাদক। সে কাঁঠালকান্দি গ্রামের মোল্লা গোষ্ঠীর চাঁন মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, চাতলপাড় ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দি গ্রামে চাতলপাড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর গোষ্ঠী (উল্টা গোষ্ঠী) ও মোল্লা গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। শনিবার সকালে এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জের ধরে দুপুর ১টার দিকে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে মোল্লা গোষ্ঠীর সমর্থক ছাত্রদল নেতা সোহরাব মিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যান। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বেশীরভাগই কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন। আহতদের মধ্যে নেয়ামুল মিয়া, বাবুল মিয়া, সুরাফ মিয়া, মোতাহার মিয়া, তালেব মিয়া, আশিক মিয়া, আলাউদ্দিন, ইউসুফ মিয়া, হাফিজ মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, দুরস মিয়া ও জলি মিয়ার নাম জানা গেছে। সোহরাব হোসাইন আবির খুন হওয়ার পর মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজন চাতলপাড় বাজারে প্রতিপক্ষের ৫ টি দোকান ভাংচুর ও লুটতরাজ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
চাতলপাড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর গোষ্ঠীর (উল্টা গোষ্ঠী) মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজন সুযোগ পেলেই আমাদের গোষ্ঠীর লোকদেরকে মারধোর করতো। এর জেরে আজ শনিবার চাতলপাড় বাজারে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলার সময় মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজন বাজারে থাকা আমাদের গোষ্ঠীর লোকজনের দোকানপাট ভাংচুর ও লুটতরাজ করে। মোল্লা গোষ্ঠীর মোতাহার হোসেন বলেন, অতর্কিত হামলা করলে দুইপক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষ চলাকালে তারা আমাদের গোষ্ঠীর সোহরাবকে টেঁটা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। পুরানো বিরোধের জেরে দুপুরে চাতলপাড় বাজারে দুই গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে মোল্লা গোষ্ঠীর সোহবার নিহত ও উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জেরেই সংঘর্ষে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম