ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি রবিবার লেবাননের ওপর ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এদিন তিনি লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউনকে বাগদাদে স্বাগত জানান—যিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথমবার ইরাক সফর করছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, ইসরায়েল গত বছরের নভেম্বরের অস্ত্রবিরতির পরও লেবাননে হামলা অব্যাহত রেখেছে। ওই যুদ্ধবিরতি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের ইতি টানে, যার মধ্যে অন্তত দুই মাস খোলামেলা যুদ্ধ হয়েছিল হেজবুল্লাহর সঙ্গে। এ লড়াইয়ে হেজবুল্লাহ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
লেবাননের কর্তৃপক্ষ রবিবার জানিয়েছে, গত চার দিনে দক্ষিণ লেবাননে এটি ছিল তৃতীয় প্রাণঘাতী ইসরায়েলি হামলা।
আউনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সুদানি বলেন, লেবাননের সার্বভৌমত্বের ওপর ইসরায়েলের বারবার হামলা ‘আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের’ শামিল।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী ২০০৬ সালের ইসরাইল-হেজবুল্লাহ যুদ্ধের অবসান ঘটানো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক প্রস্তাব ‘পুরোপুরি বাস্তবায়নের’ আহ্বান জানান। ওই প্রস্তাবের ভিত্তিতেই সর্বশেষ অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়েছিল, যা ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর থেকে কার্যকর রয়েছে।
ওই অস্ত্রবিরতির শর্ত অনুযায়ী, হেজবুল্লাহর যোদ্ধাদের লিতানি নদীর উত্তরে—সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার (১৯ মাইল) দূরে—সরে যেতে এবং দক্ষিণে তাদের সামরিক ঘাঁটিগুলো গুটিয়ে নিতে বলা হয়।
অন্যদিকে ইসরায়েলকে লেবানন থেকে তাদের সব সেনা প্রত্যাহার করতে বলা হলেও, সীমান্তসংলগ্ন পাঁচটি স্থানে তারা এখনও অবস্থান বজায় রেখেছে, যেগুলোকে তারা ‘কৌশলগত’ বলে দাবি করে।
সুদানি জানান, সফররত লেবানন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে জ্বালানি, টেলিকম ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাতে ‘উভয় দেশের সম্ভাবনার’ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইরানের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ন্ত্রিত ইরাকি সরকার লেবাননের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে এবং ২০২৪ সালের ইসরায়েল-হেজবুল্লাহ যুদ্ধের সময় বাস্তুচ্যুত হাজারো লেবাননবাসী—বিশেষত শিয়া মুসলিম—কে স্বাগত জানিয়েছে।
ইরানে ঘনিষ্ঠ ইরাকি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো লেবাননের শিয়া যোদ্ধা সংগঠন হেজবুল্লাহর দৃঢ় মিত্র। ২০২১ সাল থেকে গ্যাসসমৃদ্ধ ইরাক লেবাননের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য জ্বালানি সরবরাহ করে আসছে—যে দেশটি গভীর অর্থনৈতিক সংকটে ডুবে রয়েছে।
গত মাসে বৈরুত জানিয়েছে, তারা ইরাক থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টন গমের চালান প্রত্যাশা করছে। বাগদাদে প্রেসিডেন্ট আউন বলেন, লেবাননের প্রতি ইরাক যে ‘সহায়তা ও অনুদান’ দিয়েছে, তার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চলতি জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণ করা আউন ইরাক সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট আব্দুল লতিফ রাশিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম