নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল মদনে মর্মান্তিক ট্রলারডুবির পাঁচ বছর পূর্ণ হলো আজ (৫ আগস্ট)। ২০২০ সালের এই দিনে হাওর ভ্রমণে গিয়ে ট্রলার ডুবে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যাদের মধ্যে ছয়জনই শিশু। ট্রলারটিতে মোট ৫০ জন যাত্রী ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর তৎকালীন জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও, দুই সপ্তাহ পর ১৯ আগস্ট প্রতিবেদন জমা হয়। প্রতিবেদনে ঝড়ো বাতাস ও ঢেউকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে নৌযানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জাম রাখা, রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস পরীক্ষা নিশ্চিত করা, অতিরিক্ত যাত্রী বহন বন্ধ, চালকদের প্রশিক্ষণ, ডুবুরি ইউনিট গঠন এবং পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়।
তবে প্রশাসনের উদাসীনতায় দীর্ঘ পাঁচ বছরেও এসব সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে গত বছরও বলাই সেতুর কাছে একটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে, যদিও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, আবহাওয়া নির্ণায়ক যন্ত্র স্থাপন ও প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানো হলে এমন দুর্ঘটনা রোধ সম্ভব। তারা মনে করেন, প্রতি বছর ঘাট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আসলেও যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে না। গত বছরও ৩৩ লাখ টাকায় ঘাট ইজারা নিয়েছিলেন ইজারাদার আব্দুল হালিম।
এদিকে, ঘটনার বিচার দাবিতে প্রশাসন ট্রলারের মালিক লাহুত মিয়া, চালক আল আমিন এবং সহযোগী কামরুল ইসলামকে আসামি করে ঢাকার নৌ-আদালতে মামলা দায়ের করে। ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল রাতে মদন থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। পরে তারা জামিনে বেরিয়ে আগের মতোই ফিটনেসবিহীন ট্রলার চালনা শুরু করেন এবং যাত্রী পরিবহনে প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অলিদুজ্জামান বলেন, তিনি সদ্য দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে দেখবেন।
বিডি প্রতিদিন/আশিক