জাপানে একজন অফিসকর্মীর ১৮ ঘণ্টারও বেশি সময় কাজের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর দেশটির কর্পোরেট সংস্কৃতি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
‘A Day in the Life: Salaryman at a Black Company’ শিরোনামে ইউটিউবে প্রকাশিত ওই ভিডিও ইতোমধ্যেই ১০ লাখের বেশি বার দেখা হয়েছে। এতে দেখানো হয়েছে, একজন কর্মীর কর্মদিবস শুরু হয় সকাল ৭টায় এবং শেষ হয় রাত ৮টা ১৫ মিনিটে। অফিসে পৌঁছাতে তার সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টা। কাজ শেষে বাড়ি ফেরেন রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে। খাবার শেষ করেন রাত ১১:৩০-এ এবং ঘুমাতে যান রাত ১:১৫-এ। অর্থাৎ, দৈনিক প্রায় ১৮.৫ ঘণ্টা ব্যস্ততায় কাটে তার দিন।
ভিডিওতে কর্মীটি তার অফিসকে ‘কালো কোম্পানি’ (Black Company) বলে আখ্যা দেন। জাপানি পরিভাষায় ‘কালো কোম্পানি’ বলতে এমন প্রতিষ্ঠানকে বোঝায়, যেখানে কর্মীদের দিয়ে দীর্ঘ সময় কাজ করানো হয়, কম বেতন দেওয়া হয় এবং কর্মপরিবেশ থাকে অমানবিক। তিনি জানান, এসব কোম্পানি নবীন কর্মীদের অভিজ্ঞতার অভাবকে পুঁজি করে তাদের মুখ বন্ধ রাখে। এমনকি চাকরি ছাড়তে চাইলেও কর্মীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলা হয় এবং মানসিকভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয়।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়ার ঝড় ওঠে। অনেকে এই অবস্থাকে ‘অমানবিক’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘মানুষের কখনোই এভাবে বাঁচার কথা নয়।’ একজন মন্তব্য করেন, ‘আপনার কোম্পানি হয়তো রাতের কাজ মনে রাখবে না, কিন্তু আপনার পরিবার মনে রাখবে।’
এই ভিডিও জাপানের দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, কর্মক্ষেত্রে শোষণ এবং কর্ম-জীবনের ভারসাম্য নিয়েও নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এই বাস্তবতা জাপানে কম জন্মহার ও মানসিক চাপ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক