মার্চে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানার পর মিয়ানমারে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ মঙ্গলবার শেষ হওয়ার কথা। তবে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ প্রচেষ্টা সহজ করতে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারী ও দাতাসংস্থাগুলো।
ওই ভূমিকম্পের পর দেশটির জান্তা সরকার বলেছে, তারা আপাতত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা বন্ধ রাখবে। ২০২১ সালে গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে সেখানকার সামরিক বাহিনী। এর মাধ্যমে দেশটিতে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সেই সংঘাত শুরুর পর এবারই প্রথম বিদ্রোহীদের ওপর হামলা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে জান্তা সরকার।
এতে বলা হয়, ভূমিকম্পের ফলে মিয়ানমারে ৩ হাজার ৭০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বহু মানুষ আহত হয়েছেন। দুর্গম এলাকাগুলোতে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ভূমিকম্পের পরপরই ২০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় উভয়পক্ষ, যা মঙ্গলবার রাতে শেষ হওয়ার কথা।
তবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছে, এই যুদ্ধবিরতির সময় আরও বাড়ানো উচিত। যদিও রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে যুদ্ধবিরতির সময় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
জাতিসংঘের মতে মিয়ানমারে গত ২৮ মার্চের ভূমিকম্পে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং সেসময় প্রায় ২০ লাখ মানুষের জরুরি সহায়তা ও সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। দেশটিতে অব্যাহত লড়াই সত্ত্বেও ভূমিকম্পের চতুর্থ সপ্তাহান্তেও মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ত্রাণ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকায় মিয়ানমারে যুদ্ধবিরতি দীর্ঘায়িত করার আহ্বান জানিয়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং ব্যাংককে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ও ১০ দেশের জোট সাউথ-ইস্ট এশিয়ান নেশনস অ্যাসোসিয়েশন (আসিয়ান)- এর চেয়ারম্যান আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, তিনি মিয়ানমারের বিরোধী জাতীয় ঐক্য সরকারের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তারাও ভূমিকম্পের পরে একই রকম যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সূত্র: এএফপি
বিডি প্রতিদিন/একেএ