রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত ১৩৫০ শয্যার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা থাকায় প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিম্ন আয়ের রোগীরা এসে ভিড় করেন হাসপাতালটিতে। স্বল্প খরচের চিকিৎসা সুবিধা পেলেও হাসপাতাল ঘিরে হুইল চেয়ার পার্টির খপ্পরে পড়ে নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের। টাকা দিতে না পারলে স্বজনদের কাঁধে ভর করেই ডাক্তারের রুমে যেতে হয় রোগীদের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে টাকা ছাড়া ঘোরে না হুইল চেয়ারের চাকা। নিয়মের বালাই ভেঙে বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগের জন্য দেওয়া হাসপাতালের হুইল চেয়ারগুলো হাসপাতাল বয় ও বহিরাগত সিন্ডিকেটের দখলে রয়েছে। টাকা ছাড়া এসব চেয়ার ব্যবহার করতে পারেন না রোগীরা। তবে টাকা পেলেই ঘুরতে শুরু করে হুইল চেয়ারের চাকা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রোগীদের ব্যবহারের জন্য দেওয়া অধিকাংশ হুইল চেয়ার হাসপাতালটির বিভিন্ন গলিতে তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে টাকা মিললে আয়ারা তালা খুলে দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে রোগীদের ডাক্তারের রুম পর্যন্ত পৌঁছতে গুনতে হয় ১০০ থেকে ৩০০ টাকা। তবে এটি ওয়ার্ড পর্যন্ত পৌঁছতে তা বেড়ে হয় দ্বিগুণ।
চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার পথে কথা হয় মনির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমার অসুস্থ মাকে নিয়ে এসেছিলাম। প্রথম দিন চেয়ার আনতে গিয়ে আয়াদের বাধার মুখে পড়েছি। ২০০ টাকার বিনিময়ে হুইল চেয়ার নিয়ে ডাক্তার পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিলাম। কিন্তু যখনি ডাক্তার ভর্তির পরামর্শ দিলেন। বেড পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আমার থেকে ৭০০ টাকা দাবি করা হয়। শেষে ৫০০ টাকায় রফাদফা হয়।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার জাকির হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হাসপাতাল থেকে দেওয়া হুইল চেয়ারগুলো রোগীদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত থাকে। তবে কিছু বহিরাগত ব্যক্তিগত চেয়ার নিয়ে এসে রোগীদের থেকে টাকা দাবি করে। হাসপাতালের পরিবেশ ঠিক রাখতে তাদের বিরুদ্ধে কদিন পর পর অভিযান চালানো হয়।