ইসলাম ধর্মের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো তা সব সময় মানুষের জীবনকে সহজ করেছে। ইসলাম মানুষের ওপর এমন কোনো বিধান চাপিয়ে দেয়নি, যা তার জীবনকে সংকীর্ণ করে তুলতে পারে। যেমন—ইসলাম যখন কোনো কিছু হারাম করেছে তার চেয়ে উত্তম বিকল্প মানুষকে দান করেছে। যেন তাদের জীবনে ছন্দঃপতন না ঘটে।
আল্লামা ইবনু কাইয়িম জাওজি (রহ.) এমন কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন। যেমন—
১. ইসলাম তীরের মাধ্যমে ভাগ্যগণনা হারাম করেছে, কিন্তু তার বিকল্প হিসেবে ইস্তিখারার দোয়া ও আমল দেওয়া হয়েছে। যেন ব্যক্তি নিজের জন্য কল্যাণকর বিষয়টি বেছে নিতে পারে।
২. ইসলাম সুদ হারাম করেছে। বিকল্প হিসেবে ব্যবসা ও লাভের সুযোগ দিয়েছে। যেন সে প্রবৃদ্ধি অর্জনের সুযোগ পায়।
৩. ইসলাম জুয়া নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু ঘোড়া, উট ও তীরন্দাজের মতো বৈধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা বৈধ করেছে।
৪. ইসলাম পুরুষের জন্য রেশম হারাম করেছে। বিকল্প হিসেবে তার জন্য আরামদায়ক সুতি ও পশমি পোশাক বৈধ বলে ঘোষণা করে।
৫. ইসলাম ব্যভিচার হারাম করেছে। বিকল্প হিসেবে বিয়ে বৈধ করেছে। যেন মানুষ বৈধভাবে জৈবিক চাহিদা পূরণ করতে পারে।
৬. ইসলাম মদ হারাম করেছে। এর পরিবর্তে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর সব পানীয় বৈধ বলে ঘোষণা করেছে।
৭. ইসলাম সব ধরনের খবিস বা নোংরা খাবার হারাম করেছে। বিপরীতে তাইয়িব (যা পবিত্র ও উপাদেয়) হালাল ঘোষণা করেছে।
ইসলামী শরিয়তের বিধানগুলো অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে আল্লাহ যখন কোনো কিছু হারাম করেছেন, তখন এর বিকল্প কিছু বান্দাকে দান করেছেন যেন তার জীবনে সংকীর্ণতা তৈরি না হয়। আল্লাহ বান্দার জীবনে কোনো কঠোরতা ও সংকট চান না। তিনি বান্দার জন্য কল্যাণ ও সহজতা চান। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ ইচ্ছা করেন তোমাদের কাছে বিশদভাবে বিবৃত করতে, তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতি তোমাদেরকে অবহিত করতে এবং তোমাদের ক্ষমা করতে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করতে চান, আর যারা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তারা চায় যে তোমরা ভীষণভাবে পথচ্যুত হও। আল্লাহ তোমাদের ভার লঘু করতে চান; মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে দুর্বলরূপে।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ২৬-২৮)
আল্লাহ সবাইকে দ্বিনের সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন।