গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘বিচারকের দায়িত্ব শুধুই বিচারকার্য সম্পাদন নয়; একই সঙ্গে তাঁরা মানবাধিকারের রক্ষক ও মানবাধিকারকর্মীও বটে।’
গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে ও ঢাকাস্থ জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন কার্যালয়ের সহযোগিতায় গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা : জোরপূর্বক গুম মোকাবিলায় বিচার বিভাগের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা ও গুম কমিশনের অন্য সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
বিচারকদের উদ্দেশে সচিব বলেন, ‘বিচারক কেবল আইনের ব্যাখ্যাকারী নন, তিনি সমাজের বিবেক। মানবতা ছাড়া ন্যায়বিচার কেবলই একটি প্রক্রিয়া মাত্র; সহমর্মিতার সঙ্গে ন্যায়বিচারই প্রকৃত নিরাময়।’
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনপ্রধান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘গুমের ঘটনাগুলো শুধু বিচারিক প্রক্রিয়ার বিষয়ই নয়; এটি মানবাধিকার, নৈতিকতা ও জবাবদিহিরও প্রশ্ন। তাঁদের ন্যায়বিচারের প্রতিটি সিদ্ধান্ত মানবতার পক্ষে একটি অবস্থান। গুমের বিচার নিশ্চিতকরণে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রয়োগ, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি।’
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, ‘গুমসংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রয়োজন। এজন্য কমিশন বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনাপূর্বক গুমসংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা এবং ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রাসঙ্গিক আইনসমূহের সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।’
আলোচনায় উঠে আসে গুম প্রতিরোধে স্থায়ী গুম প্রতিরোধ কমিশন গঠন, বিচার বিভাগের আওতায় আলাদা তদন্ত সংস্থা গঠন, গুমসংক্রান্ত মামলাগুলোর জটিলতা নিরসনে স্থায়ী মনিটরিং সেল গঠন, জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং কমিশন ও বিচার বিভাগের মধ্যে তথ্যবিনিময়ের কাঠামো উন্নয়নের মতো বিভিন্ন সুপারিশ।