মাদারীপুর শহরে এখন আতঙ্কের নাম কিশোর গ্যাং। কলেজ রোড, আমিরাবাদ, বটতলা, জেলখানা মোড়, বিসিক শিল্পনগরীসহ আশপাশের এলাকায় বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিদিন এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। আহত হচ্ছেন পথচারীসহ নিরীহ মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দোকানপাট ও যানবাহন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সন্ধ্যা হলেই শহরের অলিগলিতে দলবদ্ধভাবে ঘুরে বেড়ায় কিশোর চক্র। তাদের হাতে থাকে ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোঁটা। সামান্য কারণে একে অপরের ওপর চড়াও হয়। অনেক সময় তাদের লক্ষ্যবস্তু হয় পথচারী বা ব্যবসায়ী। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় প্রতিদিন ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ভয়ে সন্ধ্যার পর মানুষ অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় গত এক মাসে অন্তত ১৫টি সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এতে একাধিক ব্যক্তি আহত হলেও কোনো মামলা বা শাস্তির খবর পাওয়া যায়নি। অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্তদের অধিকাংশের বয়স ১৪-১৮ বছরের মধ্যে হওয়ায় পুলিশ অনেক সময় আইনি জটিলতায় পড়ে। কলেজ রোডের এক ব্যবসায়ী বলেন, সন্ধ্যার পর দোকান খোলা রাখাই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। কখন কোথা থেকে কারা এসে মারামারি শুরু করে বোঝা যায় না। তাদের কিছু বলতে গেলেই হুমকি দেয়। আমিরাবাদের বাসিন্দা এমরান মুন্সি জানান, পুলিশকে জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ফলে কিশোরদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলছে। আফিয়া বেগম নামে একজন বলেন, কয়েক দিন আগে আমার ছেলে বাসায় টেবিলে পড়ছিল। হঠাৎ জানালার কাচ ভেঙে ওর গায়ে লাগে। পরে দেখি দুই পক্ষের মারামারি চলছে। আমরা চাই আমাদের সন্তানরা যেন নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করতে পারে। মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, পরিবার ও সমাজের অবহেলা, ইন্টারনেট আসক্তি এবং বখে যাওয়া বন্ধুরাই কিশোরদের এই পথে ঠেলে দিচ্ছে। তার দাবি, পরিবার, স্কুল ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এর সমাধান সম্ভব নয়। স্কুল-কলেজে নিয়মিত কাউন্সেলিং, খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি ও পারিবারিক বন্ধন জোরদার হলে কিশোরদের অপরাধে জড়ানো অনেকটা কমে যাবে বলে মত তার। মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা কিশোর গ্যাং দমনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। এলাকায় পুলিশ টহল জোরদার করেছে।