প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই অসংক্রামক রোগ দিনদিন বিস্তৃত হচ্ছে। আর্থসামাজিক, ভৌগোলিক অবস্থান এবং ঘনবসতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে এ পরিস্থিতি আরও সংকটময়। সুবিস্তৃত জনসচেতনতা ও স্বাস্থ্যবান্ধব নীতি-কৌশল হতে পারে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে বড় হাতিয়ার। দক্ষ ও কর্মক্ষম মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে না পারলে ব্যক্তিগত জীবন থেকে জাতীয় উন্নয়ন-কোনোটাই যথাযথভাবে হবে না। তাই যত চ্যালেঞ্জিংই হোক, আমাদের সুস্থ-সবল প্রজন্ম গড়ে তুলতেই হবে। গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ৩৫টি মন্ত্রণালয়ের যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২২ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর শতকরা ৭১ ভাগ ঘটে থাকে অসংক্রামক রোগের কারণে। এর মধ্যে ৫১ ভাগ মানুষের মৃত্যু হয় ৭০ বছর বয়সের নিচে, যাকে আমরা অকালমৃত্যু হিসেবে বিবেচনা করি। আমাদের ব্যক্তিগত চিকিৎসা ব্যয় (আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার) ৬৯ শতাংশ, যার বেশির ভাগ অসংক্রামক রোগের জন্য ব্যয় হয়। অসংক্রামক রোগ মানুষকে উচ্চ চিকিৎসা ব্যয়ের মুখোমুখি হতে বাধ্য করে। কোনো ব্যক্তির ক্যানসার হলে তার পরিবারকে আর্থিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে হয় এবং প্রায় ক্ষেত্রেই সহায়হীন-সম্বলহীন হয়ে পড়ে। এসব রোগের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে আমাদের বিপুল অঙ্কের টাকা চলে যায় বিদেশে। ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে, বিশেষ করে ৫ আগস্ট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ অফিস সত্যিই প্রশংসনীয় ভূমিকা নিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ডিরেক্টর (প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট) ড. থাকসাফন থামারাংসি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা তাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।